চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত এক বন্দিকে মারধরের অভিযোগে সিনিয়র জেল সুপারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন দাখিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালতে ফটিকছড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও বন্দির স্ত্রী পারভিন আক্তার হিরা এ আবেদন দাখিল করেন। 

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী বখতিয়ার উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু আইনের ১৩ (১) (২) এর (ক) (খ) (গ) ধারায় একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে ৩০ নভেম্বর আদালত আদেশ দেবেন। 

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার দেওয়ান তারিকুল ইসলাম, ডেপুটি জেলার মো. সাইমুর, কারারক্ষী সবুজ দাশ ও সুবেদার মো. এমদাদ হোসেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাদী পারভিন আক্তারের স্বামী মো. শামীম দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন। একটি হত্যা মামলায় ২০০৭ সালের শামীমকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। ২০১২ সালে তার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারদণ্ড দেন আদালত।

মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা কারা অভ্যন্তরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে বাদীর স্বামী শামীমকে শারীরিকভাবে নাজেহাল ও মারধর করেন। খাবার না দেওয়ার প্রতিবাদ করায় জেলার তারিকুল ইসলাম বন্দি শামীমকে বেধড়ক মারধর করেন। 

১৭ জুলাই সন্ধ্যায় এমদাদ, সবুজ ও সাইমুর গিয়ে তাকে কারা অভ্যন্তরে একটি আমগাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। পরে তাকে জেলারের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন জেলার তারিকুল বলেন, ‘শালা এখনো মরেনি, মরলে এক কলম লিখে দেব, কিছুই হবে না।’ এ কথা বলে জেলারও আবার শামীমকে মারধর করেন। 

নালিশি মামলার আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১১ নভেম্বর একটি মামলায় শামীমকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। তখন বাদী দেখা করতে গেলে এসব নির্যাতনের বিষয়ে বিস্তারিত বলেন তার স্বামী। বর্তমানে শামীম ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারে না। শামীমের শরীরে  এখনও আঘাতের চিহ্ন আছে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কারাগারে বন্দি নির্যাতনের বিষয়ে কিছুই জানি না। তাকে কেউ মারধর করেনি, নির্যাতন করেনি। 

কেএম/আরএইচ