কুর্মিটোলা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ /ছবি- ঢাকা পোস্ট

যেকোনও টিকা নেওয়ার পরই জ্বরজ্বর ভাব, হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এছাড়া হালকা ফুলে যাওয়া বা এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা যেকোনও টিকা নিলেই হতে পারে বলে জানিয়েছেন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ।

তিনি বলেন, এজন্য আমাদের একটি ডেডিকেটেড টিম তৈরি করা আছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ম্যানেজ করার জন্য। পাশাপাশি ২০টি বেডসহ একটি রুম প্রস্তুত করা আছে। কিন্তু সৌভাগ্যবশত গতকাল থেকে এ পর্যন্ত আমাদের কাছে এমন কেউ আসেনি যিনি এসে বলবেন, আমার খারাপ লাগছে বা কোন সমস্যা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দ্বিতীয় দিনের মত করোনার টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ বলেন, আমরা আশাবাদী আজ ১০০ জনকে ভ্যাকসিন দিতে পারব। আমরা আজ প্রথমেই এই হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের টিকা দিয়েছি। এরপর হবে জাতীয় কর্মসূচি। সেই ফাইনাল তারিখ এখনও আমরা অর্ডার পাইনি। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে যখন আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে তখন আমরা কার্যক্রম শুরু করব। আমাদের সেই প্রস্তুতি আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যে টিকা ব্যবহার করছি তা অন্যান্য ভ্যাকসিনের তুলনায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম। তারপরও অনেকের নানা কারণে সামান্য ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যতদিন পর্যন্ত এই টিকাদান প্রক্রিয়া চলবে ততদিন আমাদের ডেডিকেটেড টিম সব সময় প্রস্তুত আছে। 

এদিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দ্বিতীয় দিনের মত করোনার টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম চলছে। বুধবারের পর আজ সকাল থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমে ইতোমধ্যে হাসপাতালটির চিকিৎসক-নার্স, আনসার সদস্যসহ অনেকেই টিকা নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার হাসপাতালটিতে ১০০ জনকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। টিকা নেওয়া চিকিৎসক-নার্স, আনসার সদস্যরা জানিয়েছেন, তাদের কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।

নাক, কান, গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. এ কে এম মনিরুল হক। যিনি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র কনসালটেন্ট (ই.এন.টি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, আমি টিকা নিয়েছি। আমি সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছি সবাই যেন টিকা নিতে এগিয়ে আসেন। এখানকার চিকিৎসক হিসেবে আমারা যারা এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছি তাদের কারও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।

এরআগে দেশে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তাকে প্রথম টিকা দেওয়ার মাধ্যমে করোনার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা। আট সপ্তাহের ব্যবধানে এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে। বাংলাদেশে যেহেতু এ টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী প্রথম দফায় ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তির উপর এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে।

এএসএস/ওএফ