দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার হেফাজত নেতাদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নির্দোষ নেতাকর্মীদের ক্রমেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যারা সত্যিকার অর্থে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছিলেন, তাদের রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। আমাদের প্রমাণের মধ্যে যেগুলো আসছে, যারা ভদ্রলোক, যারা এগুলোর মধ্যে ছিলেন না, এ রকম কেউ যদি আটক হয়ে থাকেন তাদের তাদের ছেড়ে দিচ্ছি, জামিনের ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি আমাদের হাতে নয়, এটি বিচার বিভাগের হাতে। বিচার বিভাগ আমাদের নিয়ন্ত্রণে নয়।’ 

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আপনারা বলেছেন হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক দল। হেফাজত রাজনীতি করে না, নির্বাচনে যায় না। বাইরে থেকে দুষ্কৃতকারীরা এসে আপনাদের অপবাদ অথবা কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। সেখানে আপনারা ভুল করেছেন অথবা ভুল করে ফেলেছেন। আমি যদি বিগত দিনগুলোর কথা বলি, যেটা হাটহাজারী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটেছে সেদিন আপনাদের কয়েকজন নেতা আমার বাসায় রাত একটা পর্যন্ত বসেছিলেন। আমি বলেছি, যখন একটা গেদারিং হয়ে যায় তখন উপযুক্ত নেতা না থাকলে সেটা কন্ট্রোল করা যায় না। তাদের বলেছিলাম, আপনারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে যান। না হলে কালকে যে ঘটনা ঘটতে পারে সেটা কন্ট্রোল করতে পারবেন না। কথাটা যথাযথ ভাবেই হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বারবার বলতে চাই আপনারা আধ্যাত্মিক লাইনের চর্চা করেন, কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী চলেন। আপনারা যেহেতু অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সেহেতু কেন অনুপ্রবেশ ঘটে? সেখানে আপনাদের সাবধান হওয়া উচিত। আমি যেহেতু মুসলমান তাই আমি কুরআন-সুন্নাহর দেখানো পথে চলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কেউ কোরআনকে অপবিত্র করার চেষ্টা করলে আপনাদের যেমন কষ্ট লাগে, আমারও কষ্ট লাগে। তাই বলছি আমরা মুসলমানরা কারও বিশ্বাসের প্রতি অমর্যাদা করি না।’

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি গুজব ছাড়ায় সরকার তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়। ভুল করেই হোক, ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবেই হোক গুজব ছড়ালে সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। অন্য ধর্মের প্রতি বাড়াবাড়ি করতে যেমন আমাদের ধর্মে নিষেধ আছে, তেমনি সংবিধানেও নিষেধ আছে। আপনার ধর্মকে অপমান করলে যেমন কষ্ট লাগে, তেমননি অন্য ধর্মকে আঘাত করলে তারও কষ্ট লাগে। আপনাদের মত আমাদের প্রধানমন্ত্রীও শফি সাহেবকে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। আপনাদের নিয়ে চিন্তা করেন তিনি। 

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ, মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম নেতা আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জি, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান প্রমুখ।

এমএইচএন/এসকেডি