প্রায় এক দশক বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌপথে জাহাজ চলাচলের কথা ভাবছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। পরীক্ষামূলকভাবে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) এ নৌপথে দুটি জাহাজ চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এরপর সার্ভে করে ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাহাজ দুটি চালু হলে চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল যেতে সময় লাগবে ১২ ঘণ্টা।

বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম গোপাল চন্দ্র মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে জাহাজ পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করবে। হাতিয়া পর্যন্ত আমাদের জাহাজ চলে। হাতিয়া থেকে বরিশাল পর্যন্ত পথটা সার্ভে করবো। কারণ এ পথে দীর্ঘদিন ধরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন এ পথে নাব্যতা আছে কিনা, কোন কোন ঘাটে জাহাজ ধরা যাবে এগুলো আমরা সার্ভে করব।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের নৌপথে দূরত্ব ২৭০ কিলোমিটারের মতো। এরমধ্যে সাগরপথ আছে ১২০ কিলোমিটার আর নদীপথ হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। 

বিআইডব্লিউটিসি চট্টগ্রামের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফয়সাল আলম চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কত তারিখ থেকে জাহাজটি চালানো হবে তার সিদ্ধান্ত হয়নি। ২ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজ চালানো হবে। পরীক্ষামূলক ভাবে জাহাজ চলাচলে সবকিছু ঠিক থাকলে তখন জাহাজ চালানোর সময় নির্ধারণ করা হবে। এরপর থেকে নিয়মিত ভাবে জাহাজ চলবে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল সর্বশেষ জাহাজ চলাচল করেছিল ২০১১ সালের ১১ জুন। এরপর জাহাজ সংকটসহ নানা কারণে চট্টগ্রাম থেকে বরিশাল পর্যন্ত জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, এম.ভি তাজউদ্দিন ও এম.ভি বার আউলিয়া নামের জাহাজ দুইটি প্রথমে চলাচল করবে। পরে জাহাজ সংখ্যা আরও বাড়ান হবে। প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার ছেড়ে গিয়ে শুক্রবার বরিশাল থেকে ছেড়ে আসবে। যাত্রী চাহিদা সাপেক্ষে সপ্তাহে চারদিন পর্যন্ত চালাচল করানো যাবে। চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা সময় জাহাজ ছেড়ে যাবে।

সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফয়সাল আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম-হাতিয়া রুটে চলাচলকারী নতুন জাহাজ এম.ভি তাজউদ্দীন এ নতুন পরিকল্পনায় বরিশাল পর্যন্ত যাবে। এই জাহাজটি নতুন। এ ছাড়া এম.ভি বার আউলিয়াও নামের পুরাতন জাহাজটিকে সংস্কার করা হয়েছে।

এ পথে ভাড়া কত হতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগেও এ পথে জাহাজ চলাচল করছে। তখন একটা ভাড়া ছিল। বর্তমানে তেলের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। সবকিছু চিন্তা করে পরীক্ষামূলক ভাবে জাহাজ চলাচলের পরে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।

মোহাম্মদ ফয়সাল আলম চৌধুরী বলেন, জাহাজে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে যেতে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লাগতে পারে। পথে হাতিয়া ও ভোলার ইলিশায় জাহাজ থামানোর চিন্তা ভাবনা আছে। তবে সন্দ্বীপে জাহাজ যাওয়া সম্ভব না।

জানা গেছে, প্রতিটি জাহাজে ২৫টি কেবিন রয়েছে। এছাড়া তৃতীয় ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাশাপাশি ৮০০টি আসন রয়েছে প্রতিটি জাহাজে। চট্টগ্রাম থেকে বর্তমানে সড়ক পথে বরিশাল যেতে অনেক সময় লাগে। লক্ষ্মীপুর হয়ে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে বরিশাল যেতে হয়। এছাড়াও চাঁদপুর-ঢাকা কিংবা শরীয়তপুর-হরিণা ফেরি পার হয়ে যেতে হয়। এতে করে এ পথে যাতায়াতকারীদের যেতে অনেক সময়ও লাগছে। 

কেএম/আইএসএইচ