রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য বাংলাদেশ বিমানসহ সব এয়ারলাইন্সে লেবার ফেয়ার নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ভাড়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে দুই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি করেছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যগামী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আর্থিকভাবে চরম বিপাকে পড়েছেন। ৩০/৪০ হাজার টাকার এয়ার টিকেট মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে অজানা কারণে বর্তমানে ৭০ থেকে ৯৫ হাজার টাকার অধিক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। হাজার হাজার মধ্যপ্রাচ্যগামী রেমিট্যান্স যোদ্ধা এয়ার টিকিট পাচ্ছেন না। তাদের ভিসা ও ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ বিমানসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব না হলে হাজার হাজার নতুন ভিসাপ্রাপ্ত ও ছুটিতে দেশে আসা রেমিট্যান্স যোদ্ধা চাকরি হারাতে পারেন।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ বিমান যেহেতু মাত্র ১০ শতাংশের কম যাত্রী বহন করে ফলে ৯০ শতাংশের অধিক যাত্রী বহন করে দুই থেকে তিন গুণ বর্ধিত কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর এয়ার টিকিটের মূল্য হলেও বাংলাদেশ থেকে একই গন্তব্যের এয়ার টিকিটের মূল্য বর্তমানে ৭০ থেকে ৯৫ হাজার টাকার বেশি নেওয়া হচ্ছে।

এয়ার টিকিটের এ লাগামহীন অযৌক্তিক অস্বাভাবিক অনৈতিক দুই/তিন গুণ মূল্যবৃদ্ধির প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে অবিলম্বে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের (সিন্ডিকেট) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া দেশের স্বার্থে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন তারা।

বক্তারা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে দৈনিক পাঁচ হাজারের অধিক রেমিট্যান্স যোদ্ধা গমনের চাহিদা থাকলেও দৈনিক তিন হাজারের গমন সম্ভব হচ্ছে। ফলে হাজার হাজার রেমিট্যান্স যোদ্ধা যথা সময়ে এয়ার টিকিট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। জরুরি ভিত্তিতে ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করে সংকট সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে এ খাতে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

তারা বলেন, আমরা চাই সরকার নির্ধারিত খরচে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান করতে, যার অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে এয়ার টিকিটের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি। বাংলাদেশ বিমানসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ার টিকিটের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রোধসহ চলমান সংকট সমাধানে আমরা প্রধানমন্ত্রীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ সময় চলমান সংকট সমাধানে তারা চার দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে আছে— বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সকে সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অতিদ্রুত ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করা; রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য বাংলাদেশ বিমানসহ সব এয়ারলাইন্সে লেবার ফেয়ার নির্ধারণ করা; এয়ারলাইন্সগুলো যাতে স্লট বরাদ্দ (টিকিট সিন্ডিকেট) করে দুই/তিন গুণ ভাড়া অনৈতিকভাবে নির্ধারণ করতে না পারে সেটি নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন রেগুলেটরি বোর্ড গঠন করা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে ওপেন ফ্লাই স্কাই ঘোষণা বাস্তবায়ন করে নতুন নতুন এয়ারলাইন্সকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রস্তাবনা জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।

রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের পক্ষে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন— মালিক এম টিপু সুলতান, লিমা বেগম, মোস্তফা মাহমুদ, আরিফুর রহমান প্রমুখ।

এএসএস/এসএসএইচ