তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে রাষ্ট্র মামলা করতে পারত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘যদি কেউ সংক্ষুব্ধ হয়, তার তো অধিকার রয়েছে মামলা করার। এটা তো ব্যাপার নয়। আমার কাছে জিজ্ঞাসা করছেন কেন? আপনি যদি সংক্ষুব্ধ হন, আপনি মামলা করবেন। কেন রাষ্ট্র মামলা করবে? রাষ্ট্র তো সংক্ষুব্ধ নয়।’

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি ও সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে।

এসবের জেরে সোমবার রাতে ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। একইসঙ্গে জামালপুর আওয়ামী লীগের পদ হারান।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২১ মিনিট নাগাদ পদ হারানো তথ্য প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে ৮৫৮৫ ফ্লাইটে করে দুবাই যান। সেখান থেকে তিনি কানাডার উদ্দেশে রওনা হন।

তবে তাকে কানাডায় ঢুকতে দেয়নি দেশটির বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি। টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

কানাডার স্থানীয় বাংলা অনলাইন পত্রিকা ‘নতুন দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কানাডায় বসবাসরত তার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে কানাডার সরকারি সূত্র থেকে এই বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কানাডা বর্ডার সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

ডা. মুরাদ আমিরাতের একটি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় (শুক্রবার) দুপুর ১টা ৩১ মিনিটে টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। ২০১৯ সালের মে মাসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।

এমএইচএন/এসএসএইচ