মিয়ানমারে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সেখান থেকে পালিয়ে প্রায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ২০১৭ সালে

রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার করা মামলা পরিচালনা করতে আগামী কয়েক বছরে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ ডলার প্রয়োজন হবে। তবে এ পর্যন্ত সংগৃহীত হয়েছে মাত্র ১২ লাখ ডলার; যার মধ্যে ৫ লাখ ডলারই আবার বাংলাদেশের দেওয়া।  এই মামলা পরিচালনায় তহবিল গঠনে সৌদি সরকারের কিং সালমান হিউম্যানিটারিয়ান এইড অ্যান্ড রিলিফ ফান্ডের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।

গতকাল সোমবার সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দেশটির কেএস রিলিফ ফান্ডের সুপারভাইজার জেনারেল আব্দুল আজিজ আল রাবেয়ার সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ অনুরোধ জানান।

রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা পরিচালনার জন্য এ পর্যন্ত মাত্র ১২ লাখ ডলার সংগৃহীত হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ ৫ লাখ ডলার দিয়েছে। মামলা পরিচালনায় আগামী কয়েক বছরে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ ডলার প্রয়োজন হবে। 

সোমবারের সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কেএস রিলিফ ফান্ডের অনুদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ২০১৯ সালে নিউইয়র্কে সম্মেলন করার জন্যও ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে নিরাপদ ও উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে জানিয়ে রিলিফ ফান্ডের কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফরের অনুরোধ জানান। 

মিয়ানমারে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সেখান থেকে পালিয়ে প্রায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ২০১৭ সালে। তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে তাতে এখনও সফল হতে পারেনি। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবেও একটা চাপ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এরইমধ্যে ২০১৯ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধ মামলা করে গাম্বিয়া। এই মামলা লড়তে চলতে বছরের নভেম্বরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়াকে ৫ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। এদিকে কক্সবাজারের শরণার্থীশিবির থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নিতে নোয়াখালীর ভাসানচরে নিজস্ব অর্থায়নে আশ্রয় ক্যাম্প নির্মাণ করে সেখানে পাঠানোর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশে সরকার। ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছেন। 

এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ অথবা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সাহায্য করার জন্যও কেএস রিলিফ ফান্ডের সুপারভাইজার জেনারেল আব্দুল আজিজ আল রাবেয়াকে অনুরোধ জানান।

বৈঠকে দূতাবাসের পক্ষে মিশন উপপ্রধান এস এম আনিসুল হক ও কাউন্সেলর হুমায়ূন কবির উপস্থিত ছিলেন।

এনআই/এনএফ