শাহবাগের শিশুপার্কের প্রধান ফটক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি এলাকা পার্ক উন্নয়নকাজের নামে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পার্ক তিনটির ব্যবহারকারীসহ পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, পার্কগুলোর উন্নয়ন কাজ শেষ হবে কবে? আর কবেই বা সাধারণ মানুষের জন্য পার্ক তিনটি খুলে দেওয়া হবে?

উন্নয়নকাজের নামে রাজধানীর গুলিস্তানে ওসমানী উদ্যান তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালের শুরুতে পার্কটির উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছিল। নানা পরিবর্তনের মাধ্যমে উন্নয়নকাজ শেষে এর নাম দেওয়ার কথা ছিল  ‘গোসসা নিবারণী পার্ক’। কিন্তু কাজ শেষ করা যায়নি। ফলে প্রায় চার বছর ধরে পার্কটি সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারছেন না।

অন্যদিকে কারওয়ান বাজার সংলগ্ন ব্যস্ত সড়কের পাশে পান্থকুঞ্জ পার্কটিরও একই অবস্থা। এর উন্নয়নকাজও চলমান। আগে এতে সাধারণ পথচারীসহ স্থানীয়রা বসতেন, শরীরচর্চা করতেন। কিন্তু ২০১৮ সালের পর থেকে তারা পার্কটি ব্যবহার করতে পারছেন না। কারণ পার্কটি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে পার্কটির উন্নয়নকাজের অজুহাতে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া, শাহবাগের প্রাণচঞ্চল শিশুপার্কটিও বন্ধ রয়েছে উন্নয়নকাজের জন্য। এর উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। দায়িত্ব পেয়ে ২০১৯ সালে ডিএসসিসি পার্কটি সাধারণের জন্য বন্ধ করে দেয়।

ওসমানী উদ্যান 

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর ওসমানী উদ্যানের অবকাঠামো, উন্নয়নকাজশুরু হয়। নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। কথা ছিল ১০ মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে পার্কটি। কিন্তু চার বছরেও কাজ শেষ হয়নি উদ্যানটির।

জানা গেছে, প্রথমে দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কাজে গাফিলতি দেখতে পায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ কারণে ডিএসসিসি প্রতিষ্ঠানটির কার্যাদেশ বাতিল করে। পার্কটির উন্নয়নকাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি রয়ে গেছে আরও ৩০ শতাংশ। তিনটি ধাপে পার্কটির জন্য ৮৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছে ডিএসসিসি।

পার্কটির উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দুটি লেক তৈরির কথা রয়েছে, যেখানে সারা বছর পানি থাকবে। এছাড়া বসার জায়গা, শিশু কর্নার, ওয়াকিং ওয়ে, স্বাধীনতা চত্বর, ব্যায়ামাগার, টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড বোর্ড, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার পৃথক জায়গা, পাঠাগার, জাদুঘর, ওষুধের দোকানসহ নানা কিছু থাকার কথা রয়েছে। তবে এখনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা হয়নি। 

 গেট আটকে চলছে ওসমানী উদ্যানের উন্নয়নকাজ

প্রায় চার বছর ধরে টিন আর কংক্রিটে আবদ্ধ ওসমানী উদ্যান। রাজধানীর গুলিস্তান সংলগ্ন এবং সচিবালয়ের প্রধান ফটক ও নগরভবনেরও ঠিক উল্টো দিকে এর অবস্থান। প্রতিদিন অসংখ্য পথচারী পার্কটি ব্যবহার করতেন বিশ্রাম নিতে। এছাড়া স্থানীয়সহ অন্যরা নিয়মিত এ জায়গায় শরীরচর্চা এবং হাঁটা-চলা করতেন। 

পার্ক সংলগ্ন বঙ্গবাজারের পাশেই বাস করেন অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী আসাদুজ্জামান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে সকালে আমরা নিয়মিত এখানে হাঁটাহাঁটি করতাম। ব্যস্ত এলাকা হওয়ায় অনেক পথচারী পার্কটিতে নিয়মিত আসতেন, বসতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পার্কটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। 

তিনি বলেন, চারদিকে টিন দিয়ে আটকে পার্কটির উন্নয়নকাজ চলছে। এ কারণে এটি আমাদের ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। আশা করি, দ্রুত উন্নয়নকাজ শেষ করে সাধারণ মানুষের জন্য সিটি করপোরেশন পার্কটি উন্মুক্ত করে দেবে।    

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ বিষয়ে বলেন, পার্কটির কাজ শেষ হতে আরও কিছু সময় লাগবে। তবে সব কাজ যদি ঠিকঠাক চলতে থাকে, তবে আগামী জুনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করা যাবে।

বন্ধ রয়েছে পান্থকুঞ্জ পার্কও 

একসময় রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড় সংলগ্ন পান্থকুঞ্জ পার্কটি ছিল স্বস্তির জায়গা। সাধারণ পথচারীসহ স্থানীয়রা এখানে এসে বিশ্রাম নিতেন, শরীরচর্চা করতেন। অনেকে আসতেন আড্ডা দিতে। নগরের ব্যস্ত এ অংশে যেন শান্তির আশ্রয় ছিল পার্কটি। 

স্বস্তির সেই পান্থকুঞ্জ পার্কের চিত্র পাল্টে যায় ২০১৮ সালে। সর্বসাধারণের জন্য তখন পার্কের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। উন্নয়নকাজের নামে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে পার্কটি। স্থানীয়সহ পথচারীদের প্রশ্ন— পার্কটি খুলবে কবে।
  
তিন বছর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পান্থকুঞ্জকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়। তখন থেকেই পার্কটির চারদিক টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। কথা ছিল, উন্নয়ন শেষে এক বছরের মধ্যে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। কিন্তু তিন বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এর উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।

প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে ‘জল সবুজে ঢাকা’ প্রকল্পের আওতায় পার্কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে বাজেট বাড়িয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে চারপাশে দেয়াল না রাখা, পথচারীদের বিশ্রামের জন্য চেয়ার বসানো, হাঁটার জন্য রাস্তা, খাবারের জন্য ক্যাফেটেরিয়া ও পড়ার জন্য পাঠাগার নির্মাণের ব্যবস্থাসহ উন্নয়নকাজ যখন শুরু হয়, তখনই দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, পার্কের এক পাশে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের দুই থেকে তিনটি খুঁটি বসতে পারে।

টিনের বেষ্টনী দিয়ে রাখা হয়েছে পান্থকুঞ্জ পার্কে

সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় উন্নয়নকাজ। তখন থেকে এভাবেই বন্ধ রয়েছে পার্কটি। অথচ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ এখনো পান্থকুঞ্জ পার্ক এলাকায় শুরুই হয়নি। যে কারণে পার্কটি নিয়ে কোনো কাজ করছে না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ফলে এভাবে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে পার্কটি।

পাস্থকুঞ্জ পার্কটির পথ ধরে নিয়মিত যাতায়াত করেন বাংলামোটর এলাকা সংলগ্ন ঢালের বাসিন্দা একরামুল হক। তিনি বলেন, ব্যস্ত সড়কের পাশে পার্কটি হওয়ায় পথচারীদের অনেকে নিয়মিত পার্কটি ব্যবহার করতেন। স্থানীয়রাও এখানে নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। দীর্ঘদিন ধরে পার্কটি বন্ধ রয়েছে। এখন এর ভেতরে যাওয়া যায় না। চারিদিকে টিন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ভেতরে জঙ্গল হয়ে গেছে। দ্রুত পার্কটি খুলে দিলে পথচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবার উপকার হতো।

সবশেষ গত ২০ অক্টোবর ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস পান্থকুঞ্জ পার্ক পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের জন্য পান্থকুঞ্জ পার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পার্কের উন্নয়নে ডিএসসিসির একটি প্রকল্প চলমান। এক্সপ্রেসওয়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে তারা যেভাবে পরিকল্পনা নিয়েছে তাতে পার্কের বড় একটি অংশ চলে যাবে। কিন্তু উন্মুক্ত জায়গা, পার্ক— এগুলো সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে। এ এলাকার জনগণের জন্য কোনো উন্মুক্ত স্থান নেই। পার্কটি তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মেয়র বলেন, আমরা পার্কটি সংরক্ষণ করতে চাই। নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই, যাতে এর সুফল এলাকাবাসী ভোগ করতে পারেন। আমরা প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বলেছি, পার্কের স্বল্প পরিমাণ জায়গা নিতে হবে। জমি অধিগ্রহণ করলে মূল্য দিতে হবে। পার্কের পরিবেশ বজায় রেখে তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।
 
ব্যবহারের অনুপযোগী শাহবাগের শিশুপার্কটি

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এর উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ডিএসসিসি। ২০১৯ সালে পার্কটি বন্ধ করে কাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর পর থেকে শিশুপার্কটি সাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এখন প্রকল্প অনুমোদন সংক্রান্ত জটিলতায় উন্নয়নকাজও বন্ধ রয়েছে। 

পার্ক এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো শিশু পার্কটি সবুজ টিন দিয়ে চারদিক থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে। মূল ফটকে একটি নোটিশ বোর্ড টানানো। তাতে লেখা আছে, সাবধান, পার্কের উন্নয়নকাজ চলছে। কিন্তু শুরু থেকে এ পর্যন্ত কাজের উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতির চিত্র দেখা যায়নি।

স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে গ্রিন রোড থেকে শাহবাগের শিশুপার্কে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফিরোজ আহমেদ। এসে তিনি দেখতে পান পার্কটি বন্ধ। হতাশ হয়ে তিনি ফিরে যান। তার মতো অনেকেই এখানে এসে ফিরে যান। 

পার্কটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী রেবেকা সুলতানার সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা এমনিতেই কম। নেই তাদের পর্যাপ্ত মাঠ বা খেলাধুলার সুযোগ। আগে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে এ পার্কে আসতেন তবে দীর্ঘদিন ধরে পার্কটি বন্ধ থাকায় শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের উচিত শিশুদের বিনোদনের কথা ভেবে দ্রুত এই পার্কটি খুলে দেওয়া।

চলছে শিশুপার্কের উন্নয়নকাজ

জানা গেছে, বরাদ্দ নিয়ে জটিলতার কারণে পার্কটির উন্নয়নকাজ আর তেমন একটা এগোয়নি। স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পে বরাদ্দ ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা থেকে ৭৮ কোটি পার্কটির উন্নয়নকাজের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়েছিল।  

শুরু থেকেই বরাদ্দের টাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, শিশুদের জন্য থাকা আগের রাইডগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে নতুন করে আধুনিক রাইড বসাতে হবে। তাছাড়া, যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। 

এমন জটিলতায় পার্কের উন্নয়নকাজ বন্ধ থাকে দীর্ঘদিন। অবস্থার কোনো পরিবর্তন না দেখে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে বলা হয়, তারা যেন পার্কটির জন্য নতুন প্রকল্প নেয় এবং কাজ করে।

পার্কটি উন্মুক্ত হতে কত সময় লাগতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিগগিরই শিশুপার্কটি চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রকল্পটির অর্থছাড় হলে দরপত্র আহ্বানের পর কাজ শুরু হবে। 

বলা হচ্ছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষে শিশুপার্কটি আকর্ষণীয় রূপ পাবে। থাকবে নানা প্রজাতির গাছের সমারোহ। পাশাপাশি থাকবে সবুজ ঘাসের গালিচা। মাঝখানে থাকবে নয়নাভিরাম ফোয়ারা। পাশাপাশি থাকবে স্বয়ংক্রিয় প্রবেশপথও। 

শুধু তাই নয়, পার্কটিতে স্থাপন করা হবে আধুনিক নানা রাইডও। এর মধ্যে থাকবে গার্ডেন সারাউন্ডিং ট্রেন, গ্রেট আর্থকোয়াক, ফোরডি ডার্ক রাইড, স্পেস শাটল, মাইন কোস্টার, ড্যান্সিং পার্টি, মিউজিক বোট, টি কাপ, সুপার সুইং, এয়ার বাইসাইকেল, জেলিফিশ, ক্যারোসেল, ক্লাইম্বিং কার ইত্যাদি।

এএসএস/আরএইচ