কিডনি ও লিভার পাচার চক্রের মূল হোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের খুলশী থানার ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টারের পাশ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। চক্রটি এখন পর্যন্ত ৩০-৪০ জন লোককে প্রলুব্ধ করে অবৈধভাবে কিডনি ও লিভার বিক্রির জন্য ভারতে পাচার করেছে বলে দাবি র‌্যাবের। 

শুক্রবার ( ৩১ ডিসেম্বর ) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা র‌্যাব-৭ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

 গ্রেফতার তিনজন হলেন; মোহাম্মদ আলী ডালিম (৩৫), মো. আতিকুর রহমান রনি (৩৬) ও মো. আলম হোসেন (৩৮)।

র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বাংলাদেশে এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা ডালিম। রনি আন্তর্জাতিক কিডনি ও লিভার পাচারকারী দলের সদস্য। ভারতে অবস্থান করেন শাহীন নামে আরেক বাংলাদেশি। তিনি রনি, আলমদের মাধ্যমে কিডনি ও লিভার বিক্রি করবে এমন লোকজন সংগ্রহ করে তাদের ওই দেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ ক্ষেত্রে কিডনি ও লিভার দাতাদের ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দেয় চক্রটি। কিন্তু এসব কিডনি ও লিভার চক্রটি ভারতে ক্রেতাদের কাছে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করত। 

তিনি বলেন, আসামি ডালিমের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা প্রথমে কিডনি ডোনেট সেন্টারসহ বিভিন্ন নামে ফেসবুক পেজ খোলে। পেজে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে ডোনারদের নানাভাবে কিডনিও লিভার বিক্রির (ডোনেশনের) ব্যাপারে প্রলোভন দেখানো হয়। কিডনি বা লিভার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করবে এমন ব্যক্তি পাওয়া গেলে তাদের পাসপোর্ট তৈরি ও ইন্ডিয়ান ভিসা লাগানোর ব্যবস্থা করে দেয় চক্রটি। তারপর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের রক্ত, কিডনি ও লিভারের পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্ট ঠিক থাকলে তাদের ভারতে পাচার করে। এরপর ভারতে অবস্থানরত শাহীন ওই দেশে আবারও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কিডনি ও লিভার সংগ্রহের ব্যবস্থা করে। এ চক্রটি এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০ জন লোককে প্রলুব্ধ করে অবৈধভাবে কিডনি ও লিভার দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

তিনি আরও জানান, অভিযুক্তরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে খুলশী থানায় মানব পাচার আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কেএম/এসকেডি