তামাক কর বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের সম্পৃক্ততা জরুরি
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি মিডিয়ার ভূমিকা অনস্বীকার্য। মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সঙ্গে ‘তামাক কর বৃদ্ধি, বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভায় বক্তারা একথা বলেন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এই লক্ষ্য অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর বৃদ্ধির বিকল্প নেই। এছাড়া তিনি জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ও ক্ষতিকর পণ্যের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার জন্য মিডিয়াকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু। তিনি বলেন, তামাক ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে সবাইকে তামাক নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসা জরুরি। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের তুলনায় বাংলাদেশ সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের মূল্য তুলনামূলক কম ও সহজলভ্য। তামাকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে মিডিয়াকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় বক্তব্য রাখেন দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম, ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব, ডাসের উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুল, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার নাসির উদ্দীন শেখ, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কামাল মোশারেফ।
বিজ্ঞাপন
সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য এবং সভাটি সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট্রের কর্মসূচি প্রধান (টিসি, এনসিডি) সৈয়দা অনন্যা রহমান।
নুরুল ইসলাম হাসিব বলেন, তামাক কর কাঠামোর জটিলতাগুলো চিহ্নিত করে পৃথিবী অনেক দেশ তামাক নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা তাদের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি। তামাক কোম্পানিগুলো নানা কৌশলে তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। এ বিষয়ে অধিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যমের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করা উচিত।
হেলাল আহমেদ বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে তামাক কোম্পানির প্রতিনিধিদের অবৈধ হস্তক্ষেপে একাধিকবার দাবি জানানোর পরও তামাকের মতো একটি ক্ষতিকর পণ্যের ওপর আশানুরূপ কর বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এছাড়া, পাঠ্যপুস্তকে তামাককে অর্থকরী ফসল হিসাবে উপস্থাপনের ফলে তামাকের পক্ষে ইতিবাচক তথ্য প্রচার হচ্ছে যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা তথা সরকারের সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আমিনুল ইসলাম বকুল বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করছে। তামাকের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষতির সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছায় না। এ ক্ষেত্রে মিডিয়ার ভূমিকা অনস্বীকার্য। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কোম্পানির বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রচারে মিডিয়াকে আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
এআর/ওএফ