সড়ক দুর্ঘটনায় ভাইকে হারিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের বাইরে আহাজারি করছিলেন নিহত সাংবাদিক হাবীবুর রহমানের ছোট ভাই সাইদুর রহমান নাসির। কোনোভাবেই তাকে শান্ত করা যাচ্ছিল না। অঝোরে কাঁদছিলেন আর বারবার বলছিলেন, ‘ও ভাই আমি তো এতিম হয়ে গেলাম রে ভাই।’

সাংবাদিক হাবীবুর রহমান মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢামেকে ছুটে আসেন ছোট ভাই নাসির।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) নাসির কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বড় ভাই আমাকে বাবার মতো আগলে রাখতেন। আমি নারায়ণগঞ্জে থাকি। খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে ছুটে আসি। এসে শুনি আমার ভাই আর নাই। আমাকে এতিম করে চলে গেল আমার ভাই। আমি কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার ভাইয়ের একটি সন্তান আছে। কাকে সে বাবা বাবা বলে ডাকবে।

তিনি আরও বলেন, রাতে ভাইয়া কোথা থেকে ফিরছিলেন সেটা এখনও জানি না। আমাদের বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায়। বাবা মোহাম্মদ পিয়ার মিয়া। ভাইয়া হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন।

সময়ের আলোর নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাবীবুর রহমান সময়ের আলোতে আওয়ামী লীগ বিটে কর্মরত ছিলেন। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। ঢাকা মেডিকেলে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে।

তিনি আরও জানান, হাবীবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সময়ের আলোতে যোগদানের আগে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। এ পত্রিকার হয়ে সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন করেছিলেন। সাড়াজাগানো প্রতিবেদনের জন্য তিনি সময়ের আলোর ‘মাসসেরা রিপোর্টার’ সম্মাননাও পেয়েছিলেন।

হারুন উর রশীদ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে হাবীবুর রহমানের জানাজা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), সময়ের আলোর কার্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হবে।

এদিকে হাবীবুর রহমানের মৃত্যুর সংবাদ শুনে সহকর্মীরা ঢাকা মেডিকেলে ছুটে আসেন।

এসএএ/এসএসএইচ