আন্তর্দেশীয় নদীর পানি ব্যবহারের সমন্বিত মডেল বাস্তবায়নের জন্য আন্তঃদেশীয় স্টেকহোল্ডার পর্যায়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘তিস্তা নদী অববাহিকা : সংকট উত্তরণ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ‘৭ম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন ২০২২' এর দ্বিতীয় দিন আলোচকরা এ আহ্বান জানান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরিয়াল ফেলো শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে পানিকে কেবল সম্পদ নয়, বরং একটি কৌশলগত সম্পদ হিসেবে দেখা হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় নদী ভূ-রাজনীতিকে প্রভাবিত করে, ভূ-রাজনীতি হলো রাজনৈতিক মতামত ও জাতীয় স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করার একটি হাতিয়ার। ভূ-রাজনীতিকে কেবল একক লাভের দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয়। ভূ-রাজনীতিকে উভয়ের জন্য লাভবান দৃষ্টিতে দেখতে হবে।

আলোচনায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও এনভায়র্নমেন্ট গভার্নড ইন্টিগ্রেটেড অর্গানাইজেশনের ডিরেক্টর জয়ন্ত বসু একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তার গবেষণাপত্র থেকে উঠে আসে, দক্ষিণ এশীয় আন্তর্দেশীয় নদীর সমস্যাগুলো আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, কারণ এ অঞ্চলের সমস্ত দেশ প্রধানত কৃষি, জলবিদ্যুৎ এবং অন্যান্য কারণে নদীর উপর প্রবলভাবে নির্ভরশীল। এ অঞ্চলে অসম রাজনৈতিক ক্ষমতার উপস্থিতি; আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও স্থানীয় রাজনৈতিক সম্পর্কের প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তন ,আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা ও বণ্টনের বিষয়ে আলোচনার প্রক্রিয়াটি জবাবদিহিমূলক এবং স্বচ্ছ হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামিল বলেন, নিয়ম অনুযায়ী বছরে দুই বার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন এবং এর কোনো ফলপ্রসূ পরিণতি লক্ষ্য করা যায় না।

সম্মেলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক জেরিন ইয়াসমিন চৈতির উপস্থাপিত গবেষণাপত্র ‘ লিভিং উইথ তিস্তা রিভার : উইমেনস লাইভলিহুড স্ট্র্যাটিজি ইন দ্যা চ্যাঞ্জিং ক্লাইমেট অব দ্যা তিস্তা রিভার বেসিন’ থেকে উঠে আসে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং আর্থ-সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে নদীর সঙ্গে নারীর একটি দৃঢ় ও নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। 

অধ্যাপক জেরিন ইয়াসমিন বলেন, তিস্তা নদীর অববাহিকায় বসবাসরত নারীরা নতুন চাষ পদ্ধতি, বিকল্প জীবিকার কৌশল এবং দুর্যোগের প্রস্তুতিতে নিয়োজিত হচ্ছেন যা তাদের ক্ষমতায়নের পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করছে।

এএসএস/এসকেডি