করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৮৫ শতাংশই টিকা নেননি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, দেশে তিন কোটির অধিক টার্গেট পিপল এখনও টিকার বাইরে রয়ে গেছে। যারা টিকা গ্রহণ করেননি করোনা আক্রান্ত হয়ে তারাই মারা যাচ্ছেন বেশি। 

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলো শয্যার ২৫ শতাংশ রোগী ভর্তি রয়েছে। ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে ৪ হাজার শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজারের কিছু বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫০০ জনের মতো।

দেশে যে হারে সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তাতে অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে শয্যার চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে বলেও জানান তিনি।

জাহিদ মালেক বলেন, এখনও ৩ কোটি টার্গেট পিপল টিকার বাইরে। আমরা দেখলাম পরিবহন সেক্টর, শিল্প সেক্টর বাকি আছে, দোকানপাট, নির্মাণ শ্রমিক শ্রেণি এখনও টিকা নিতে বাকি; তারা টিকা নিতে এখনও এগিয়ে আসেননি। তাদের টিকা দেওয়ার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটি নিয়ে গতকাল একটি বৈঠকও হয়েছে; সেখানে আলোচনা হয়েছে কীভাবে উনাদের টিকার আওতায় আনা যায়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথাও বলেছি।

তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যু সেভাবে বাড়েনি। সে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির হারও খুব বাড়েনি। এর একটি কারণ, আমার টিকাদান কর্মসূচি ভালোভাবে করতে পেরেছি।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, বৈশ্বিক ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণে সংক্রমণ বেড়েছে, ৭০-৮০ ভাগ ওমিক্রনে আক্রান্ত, যা আশঙ্কাজনক।

মন্ত্রী জানান, টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে টিকা কেনা হয়েছে ৩১ কোটি। এর মধ্যে ২৪-২৫ কোটি টিকা হাতে এসেছে। যার মধ্যে সাড়ে ১৫ কোটি টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। সোয়া ৯ কোটি প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজ ৬ কোটির কাছাকাছি।

তিনি বলেন, এক মাসের কম সময়ের মধ্যে ১ কোটি ২৫ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এটা একটা বড় কাজ ছিল। আমার ইতোমধ্যে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছি। ফলে মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি কম হচ্ছে।

এম এ মবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের পরিচালক (শিক্ষা) এ এইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদউদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান। এ সময় বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

টিআই/এসকেডি