সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সৃষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আন্দোলনকারীদের বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগেই উদ্ভূত সমস্যার দ্রুত সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সিলেটের শাবিপ্রবিতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং সংকট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়ে অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন শিক্ষা ও সংস্কৃতি উপ-পরিষদ সম্পাদক খুরশিদা ইমাম।

সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সিলেটের শাবির সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বলা হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। 

এ সময় আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিস্থিতির দ্রুত অবসানসহ শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করে তাদের শিক্ষা জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন-পীড়নের মাধ্যমে বন্ধ না করে অভিভাবকতুল্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংবেদনশীলতার সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে মহিলা পরিষদ।

>> অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ক্ষয়ক্ষতির আগেই এ বিষয়ে জরুরি উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে আশু উদ্যোগ গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতিকে স্বাভাবিকের লক্ষ্যে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

>> আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর যারা হামলা করেছে তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

>> বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অব্যবস্থাপনা দূর করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

>> গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ও এ ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের লক্ষ্যে আরও সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে।

>> আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।  

লিখিত বক্তব্য শেষে ঘটনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন সংগঠনের সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা মুকুল।

তিনি বলেন, পরিস্থিতির শিকার হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হলেও শিক্ষার্থীদের অনশন থেকে ফেরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যা খুবই উদ্বেগের। তিনি আন্দোলনকারীদের বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগেই উদ্ভূত সমস্যার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, শিক্ষাঙ্গনে লেখাপড়ার একটা সুন্দর পরিবেশ থাকবে, কিন্তু কেন শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই? তা প্রশ্নসাপেক্ষ।

এ সময় তিনি আরও বলেন, সংগঠন শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ছাত্রদের সঙ্গে বসে বৈঠক করে ন্যায়সঙ্গত সমাধান দ্রুত করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে কোনো নৈরাজ্য থাকবে না, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুসহ সহ-সভাপতিরা, সম্পাদকমন্ডলী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও সংগঠনের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/ওএফ