বরগুনায় লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমিটি ইতোমধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, তদন্ত কমিটির দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়নসহ দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বেগম সুলতানা নাদিরার এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌপথে যাত্রী পরিবহনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যেসব আইন-কানুন ও নীতিমালা রয়েছে তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে সারাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে যাত্রীবাহী নৌযানগুলো নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে সুগন্ধ্যা নদীতে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিদুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। 

তিনি বলেন, এর আগে নৌযানে ছোটখাট অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হলেও ব্যাপক আকারে অগ্নিদুর্ঘটনা এটাই প্রথম। ওই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ইতোমধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়নসহ দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌ-দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের পরিবার পরিজনকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএ-তে 'নৌদুর্যোগ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ড' নামে একটি কল্যাণ তহবিল রয়েছে। ওই তহবিল থেকে লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রতিজন মৃত ব্যক্তির পরিজনকে ১,৫০,০০০ (এক লাখ পঞ্চাশ হাজার) টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। 

তিনি বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনার ফলে নিহত যাত্রীদের তালিকা ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন থেকে বিআইডব্লিউটিএতে পাঠানো হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী শিগগিরই নিহত যাত্রীদের পরিজনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়। 

রংপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার এক প্রশ্নের উত্তরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিআইডব্লিউটিসির নিয়ন্ত্রণাধীন ফেরি পারাপারে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা আছে। অ্যাম্বুলেন্সে, ব্রেইন স্ট্রোক করা মুমূর্ষু রোগী ফেরি পারাপারে গুরুত্ব বেশি এবং প্রাধিকার পেয়ে থাকেন। 

তিনি বলেন, মাঝিরকান্দি একটি নতুন ঘাট। শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি ঘাটটি গত ৮ ডিসেম্বর চালু করা হয়। একটি মাত্র পন্টুন দিয়ে এই ঘাটে ফেরি পারাপার করা হয়ে থাকে। ফেরি ঘাটটির রাস্তা অনেক সরু এবং শুধুমাত্র প্রাইভেটকার/হালকা যানবাহন সিরিয়াল অনুযায়ী পারাপার করা হয়ে থাকে। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মুমূর্ষু রোগীবাহী কোনো অ্যাম্বুলেন্স পারাপারের জন্য ঘাটে অপেক্ষমান থাকে না। সবসময় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব গাড়ি পারাপার করা হয়ে থাকে। ঘাটে কর্মরত স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে গত ৮ জানুয়ারি উত্থাপিত অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এরপরও এ ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সংঘটিত হলে দায়ী ব্যক্তি/ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এইউএ/জেডএস