সপ্তম ধাপে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর কেন্দ্রে নির্বাচনী সহিংসতায় এক কিশোর নিহত হয়েছেন।

সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরের নাম তাসিফ।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, নলুয়ায় একজন মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমরা ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারব।

এদিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী মিজানুর রহমান অভিযোগ করেছেন, নিহত তাসিফ তার নিকটাত্মীয়। ওই কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বহিরাগতরা।

নিহত তাসিফ (১২) মরফলা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি মরফলা আর এন এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মারফলা বোর্ড অফিসে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ চলছিল। দুপুরের দিকে কেন্দ্রের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মানুষের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। তখন তাসিফ ও দৌড় দেয়।

এরই একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে খুন করে। এরপরে কেন্দ্রটির বাইরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে বলেও জানা গেছে।

সাতকানিয়া উপজেলায় ভোট শুরুর কিছু সময় পরেই খাগরিয়া ইউনিয়নের গণিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। কেন্দ্র দখল নিয়ে প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আক্তার হোসেন ও মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম উদ্দীনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেছেন খাগরিয়া ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বাঁশখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওমর ফারুক।

এছাড়া চট্টগ্রামের সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র  চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম উদ্দিনের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেলিম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জসিম উদ্দিনের লোকজন আমার ওপর হামলা করেছে। এছাড়া সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর কেন্দ্র থেকে নিজের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।

এছাড়া বাজালিয়া ইউনিয়নের বড়দুয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় এই কেন্দ্রে কিছুক্ষণের জন্য ভোট বন্ধ  ছিল। এ কেন্দ্রে তিনজন সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ১৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে ৪ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে না। তবে ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ চার ইউনিয়ন ছাড়া বাকি ১২টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদ, ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

কেএম/এমএইচএস