রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নৃশংসভাবে খুন হওয়ার ১০ বছর পার হয়েছে। এতো বছরেও এই হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়নি। বিগত ১০ বছরে ৮৫ বার সময় নিয়েও আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তারা।

তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মামলাটির তদন্ত শেষ হওয়ার বিষয়টি এখনো ঝুলে আছে ফরেনসিক ও ডিএনএ রিপোর্টের ওপর। ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই দুই পরীক্ষার প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত শেষ হবে না তদন্ত।

এদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারি ছিল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৮৫তম তারিখ। কিন্তু এই তারিখেও অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি কর্মকর্তা। তাই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরবর্তী সময় ধার্য করেছেন ২৩ ফেব্রুয়ারি।

আরও জানা যায়, মামলাটির অভিযোগপত্র জমা না দেওয়ায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনো পিপি নিয়োগ দেওয়া যায়নি। আদালতে মামলাটি এখন দেখছেন জেনারেল রেকর্ড অফিসার (জিআরও)।

মামলাটির জিআরও পরিদর্শক জালাল উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, আদালত থেকে ৮৫ বার সময় নিয়েও তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি। মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় হয়তো সময় বেশি লাগছে।

উল্লেখ, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি খুন হন। এ সময় বাসায় ছিল সাংবাদিক দম্পতির ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ।

ঘটনার পর এ বিষয়ে একটি মামলা হয় ডিএমপির শের বাংলা থানায়। মামলার চার দিন পর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়ে ডিবিকে। ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে  তদন্তের ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। সেদিন আদালত র‍্যাবকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেন।

এদিকে সাগর-রুনি হত্যার এক দশক পূর্ণ হওয়ায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির গ্রহণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউর দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বছর ঘুরে আবারও সেই ১১ ফেব্রুয়ারি। ২০১২ সালে এইদিন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন। এক দশক পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু প্রকৃত হত্যাকারীদের এখনও শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়নি। বিচার প্রক্রিয়াও থমকে আছে। নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে ডিআরইউসহ গোটা সাংবাদিক সমাজ আজও সোচ্চার।

ডিআরইউ তিন দিনের কর্মসূচি হলো- বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টায় ডিআরইউ চত্বরে মোমবাতি প্রজ্বলন; শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ডিআরইউ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ; রোববার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ।

এমএসি/এমএইচএস