অল্পবয়সী নারীদের বিভিন্ন দেশের গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করে দিত চক্রটি। আর যারা বিদেশে যাওয়ার জন্য রাজি হতো না তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিত তারা।

এভাবে চক্রটি এখন পর্যন্ত ৮০ জন নারীকে বিদেশে পাচার করেছে। পাচার করা নারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে তারা। বিদেশে পাচার করার পর চক্রটির বাকি সদস্যরা তাদের নানা অসামাজিক কাজে জোরপূর্বক লিপ্ত করত।

এসব সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের তিনজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১।

গ্রেপ্তাররা হলেন মো. আজিজুল হক (৫৬), মো. মোছলেম উদ্দিন ওরফে রফিক (৫০) ও মো. কাউছার (৪৫)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি পাসপোর্ট, তিনটি মোবাইল ফোন, নগদ ২৭ হাজার টাকা ও তিনজন নারী ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) উত্তরায় অবস্থিত র‍্যাব-১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, বর্তমানে দুবাই এ অবস্থানরত মহিউদ্দিন (৩৭) ও শিল্পীর (৩৫) পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে এই মানব পাচারকারী চক্রটি চলছে। এই দুই জনের নির্দেশে গ্রেপ্তাররা নানা প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের বিদেশে পাচার করে আসছিল। চক্রটির বাংলাদেশের প্রধানরা হলেন নূর নবী ওরফে রানা (৩৫) ও মনজুর হোসেন (৩৩)। এই দুই জন পলাতক রয়েছেন।

গ্রেপ্তার মো. আজিজুল হক এই চক্রের অন্যতম সমন্বয়ক। আজিজুল হকের মাধ্যমে মহিউদ্দিন ভিকটিমদের বিদেশে নিত। আরেক পলাতক আসামি তাহমিনা বেগম (৪৮) ও গ্রেপ্তার রফিক এবং কাউছার কমবয়সী সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করত। পরে তাদের বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর জন্য রাজি করতো। আর যারা রাজি হতো না তাদের হত্যা করার হুমকি দিতো চক্রটি। এভাবে নারীদের বিদেশে পাচার করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন নারীকে এভাবে বিদেশ পাচার করেছে। পাচার হওয়া নারীদের উদ্ধারে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে র‍্যাবের কর্মকর্তারা জানান।

এমএসি/আইএসএইচ