আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে সিউল বাংলাদেশ দূতাবাস। 

সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, এ উপলক্ষে দূতাবাস বিকেলে ইউনেস্কো সম্পর্কিত কোরিয়ান জাতীয় কমিশনের সঙ্গে যৌথভাবে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউনেস্কো সম্পর্কিত কোরিয়ান জাতীয় কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, মেক্সিকো, ভারত, রুয়ান্ডা, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া ও ডোমিনিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রদূতরা ও বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনৈতিকরা, কোরিয়ার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন প্রারম্ভিক বক্তব্য এবং ইউনেস্কো সম্পর্কিত কোরিয়ান জাতীয় কমিশনের সহকারী মহাসচিব স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন তার বক্তব্যে ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন, যিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন এবং বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে যান। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পটভূমি ও তাৎপর্য এবং মাতৃভাষা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বর্তমান সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো)-এর মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করা হয়। এরপর মেক্সিকো, ভারত, রুয়ান্ডা ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতরা  মাতৃভাষা উন্নয়ন ও সুরক্ষায় নিজ নিজ দেশের সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগগুলোর ওপর বিস্তারিত বক্তব্য দেন।

আলোচনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশ, ভারত, কলম্বিয়া ও শ্রীলঙ্কার শিল্পীরা বর্ণিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের ভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন।

এদিন সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এর আগে একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রদূত দেলওয়ার হোসেন আনসান শহরের মাল্টিকালচারাল পার্কে অবস্থিত স্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এনআই/এসএসএইচ