ছবি : সংগৃহীত

বিংশ শতাব্দীর তিরিশের দশক। তখন ইংরেজ আমল। একদিন বিকেলে কলকাতার ইডেন গার্ডেনের বিপরীতে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন প্রায় ছয় ফুট লম্বা একজন লোক। হঠাৎ লোকটার পায়ের কাছে ঘ্যাঁচ করে থেমে গেল একটি গাড়ি। সেই গাড়ি থেকে নেমে এলেন বাংলার গভর্নর স্বয়ং। সঙ্গে নামলেন তার কন্যা।

ইংরেজ গভর্নর সোজা এগিয়ে গিয়ে আঁকড়ে ধরলেন ঘটনার আকস্মিকতায় গভর্নরের সঙ্গী-সাথীদের মতোই হতভম্ব হয়ে যাওয়া ওই লম্বা লোকটির হাত, বিনিময় করলেন কুশল। তারপর, নিজ কন্যাকে ডেকে বললেন, ‘এসো, ফুটবলের জাদুকরের সঙ্গে পরিচিত হও।’ (Meet the wizard of football)।

ফুটবলের ওই জাদুকরের পুরো নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। ‘জাদুকর সামাদ’ নামেই অবশ্য তিনি সমধিক প্রসিদ্ধ। তার জন্ম হয়েছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের কাছাকাছি ভুরী গ্রামে, ১৮৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বর। তখন ‘বাংলাদেশ’ নামক ভূখণ্ডে জন্ম নেননি। কিন্তু এই ভূখণ্ডে কেটেছিল তার শেষজীবন। অনেকটা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো।

আরও পড়ুন >>> পেলেও পারলেন না মৃত্যুকে ডজ দিতে 

নজরুলরে জন্মও এদেশের মাটিতে হয়নি, অথচ জীবনের শেষ সময়টা কেটেছে তার এদেশেই। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে যখন ‘পাকিস্তান’ ও ‘ভারত’ নামক দু’টি দেশ জন্ম নিলো, তখন জাদুকর সামাদ চলে আসেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দিনাজপুরের পার্বতীপুরে।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি কাটিয়েছিলেন ওই পার্বতীপুরেই। পার্বতীপুরে এখনো আছে সেই বাড়ি, যেখানে তিনি বাস করতেন; আছে সেই নারিকেল গাছ দু’টিও, যেগুলো তিনি নিজ হাতে লাগিয়েছিলেন। পার্বতীপুরেই চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন বিশ্ব ফুটবলের এই মুকুটহীন সম্রাট। তার এপিটাফে লেখা, “চিরনিদ্রায় শায়িত ফুটবল জাদুকর সামাদ”।

সামাদের অতুলনীয় খেলোয়াড়ি-জীবনের মৃত্যু ঘটেছিল অবশ্য অনেক আগেই। ১৯৩৬ সালে মাঠে আহত হওয়ার পর তিনি আর তেমন করে খেলতে পারেননি। তার আহত হওয়ার ঘটনা তীব্রভাবে নাড়া দিয়েছিল তৎকালীন অবিভক্ত উপমহাদেশের ফুটবল-জগতকে।

বাংলা ১৩৪৩ সালের (১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ) শ্রাবণ মাসে, কলকাতা থেকে প্রকাশিত মাসিক মোহাম্মাদী (দশম সংখ্যায়) সামাদের আহত হওয়া প্রসঙ্গে একজন লেখক লিখেছিলেন, ‘খেলায় সীনবোন ভাঙ্গিয়া যাওয়াতে সামাদ কখনও খেলিতে পারিবে কি না এবং পারিলেও তার সে-ফর্ম বজায় থাকিবে কি না তা বলা খুবই শক্ত। ...সামাদ গত তেইশ বছর ধরিয়া ফুটবল খেলিয়া আসিতেছেন এবং এতদিনেও তার ফর্মের কোনোরূপ পরিবর্তন হয় নাই। বস্তুত ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে ভারতে তার তুলনা তো নাই-ই, জগতেও তার সমকক্ষ খেলোয়াড় খুব কমই আছে। সামাদ এমন দরের খেলোয়াড়, যার আবির্ভাব ঘন ঘন আশা করা যায় না। সামাদ বস্তুত শতাব্দীর দান।’

এই ‘দান’ তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের ফুটবল দলকে পরিণত করেছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল দলে। ম্যারাডোনা যেমন ১৯৮৬ সালে নিজের নৈপুণ্য ও নেতৃত্বগুণে তুলনামূলকভাবে দুর্বল আর্জেন্টিনাকে বিশ্বজয়ী দলে পরিণত করেছিলেন, অনেকটা তেমনি জাদুকর সামাদের কালজয়ী ফুটবল প্রতিভা ও নেতৃত্বগুণ তৎকালীন সর্বভারতীয় ফুটবল দলকে গ্রেট ব্রিটেনের মতো বিশ্বসেরা ফুটবল দলের বিরুদ্ধেও জয় এনে দিয়েছিল (যেমন—১৯৩৩ সালে সামাদের নেতৃত্বে সর্বভারতীয় দল গ্রেট ব্রিটেনকে ৪-১ গোলে এবং শক্তিশালী ইউরোপীয় টিমকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছিল)।

আরও পড়ুন >>> মেসির জাদু না ফরাসি বিপ্লব 

অবিভক্ত ভারতের ফুটবলে সামাদের অবস্থান কোথায় ছিল তা জানা যায় তার সময়কার একজন কৃতি ফুটবলার গোস্ট পালের এই বক্তব্য থেকে—‘সামাদ ছিলেন ভারতীয় ফুটবলের বিরাট অশ্বত্থ গাছ, যার ছায়ায় অন্য ভারতীয় ফুটবলাররা লালিত হয়ে তাদের নৈপুণ্য দেখাতো।’

সামাদের অনুপস্থিতি দলকে পরিণত করতো সাধারণে। একবার আফ্রিকায় এক সফরের সময় ষড়যন্ত্র করে তাকে অধিনায়ক না-করায়, সামাদ অভিমানে দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ইতিহাস সাক্ষী, সামাদবিহীন সর্বভারতীয় দলটি সেবার তেমন কোনো সাফল্যই দেখাতে পারেনি।

বাংলার তৎকালীন গভর্নর স্বীয় কন্যার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় সামাদের জন্য ব্যবহার করেছিলেন ‘ফুটবলের জাদুকর’ বিশেষণটি। সত্যিকার অর্থেই ফুটবল নিয়ে ‘জাদু’ দেখাতে পারতেন তিনি। একজন ক্রীড়া লেখক লিখেছেন, ‘ফুটবলের ওপর অসাধারণ দখল ছিল সামাদের। বল তার পায়ে আঠার মতো লেগেই যে শুধু থাকতো তা নয়, বল নিয়ে তিনি যেন যা খুশি তা-ই করতে পারতেন।’

গোল করার এবং করানোর অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তার। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুষ্টিযোদ্ধা মুহাম্মদ আলী বক্সিং রিং-এ নামার আগেই অনেক সময় বলে দিতেন কত রাউন্ডে প্রতিপক্ষকে নক আউট করবেন। সামাদও অনায়াসে বলে কয়ে গোল দিতেন, গোল করতেন বাজি ধরে।

সামাদের ইচ্ছেমতো গোল করবার ক্ষমতা সম্পর্কে কোনো সন্দেহ ছিল না তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের বড়লাট স্যার এস এফ জ্যাকসনেরও। তিনি একবার সামাদকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘সামাদ, আজ আপনি খেলায় কয়টা গোল করবেন?’ সামাদ বিনয়ের সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘ইয়োর এক্সিলেন্সি, আজ আমার গোল করারই তেমন একটা ইচ্ছে নেই। আজ আমি আমার সহযোগী খেলোয়াড়দের দিয়ে গোল করাব।’ সামাদ তার কথা রেখেছিলেন।

আরও পড়ুন >>> ফুটবল তারকারা যেভাবে উঠে এসেছেন 

খেলার মাঠে মাঝে মাঝে অবিশ্বাস্য সব ঘটনার জন্ম দিতেন সামাদ। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছিল একবার ইন্দোনেশিয়ায়। সর্বভারতীয় ফুটবল দল গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার জাভায়। খেলা চলাকালে ইন্দোনেশিয়ার বেশ ক’জন খেলোয়াড় কাটিয়ে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে তীব্র শট করলেন সামাদ।

বল গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো মাঠে। বিস্মিত হলেন তিনি। গোল হলো না কেন! কিছুক্ষণ পর আবারও সামাদের তীব্র শটের বল ইন্দোনেশিয়ার গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে এলো। এবার সামাদ রেফারিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন, ‘গোলপোস্টের উচ্চতা কম আছে। তা না-হলে, আমার দুটো শটেই গোল হতো।’ ফিতা দিয়ে মেপে দেখা গেল সত্যিই গোলপোস্টের উচ্চতা স্ট্যান্ডার্ড মাপের চেয়ে চার ইঞ্চি কম!

বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে এমন বিস্ময়কর ঘটনার জন্ম আর কোনো ফুটবলার দিয়েছিলেন বলে শুনিনি। আসলে ফুটবল নিয়ে সেই কিশোর বয়স থেকে প্র্যাকটিস করতে করতে সামাদ পরিণত হয়েছিলেন ফুটবলের এক মহান শিল্পীতে।

১৯১৩ সালে বিখ্যাত এরিয়েন্থ ক্লাবের হয়ে কলকাতার মাঠে প্রথম পা রাখবার দিনেই ক্লাবের মুখ্য কোচ উমেশচন্দ্র মজুমদার সামাদকে একটু পরখ করেই রায় দিয়েছিলেন, ‘ওকে আমার দেবার কিছু নেই। ও নিজেই ফুটবলের শিক্ষক।’

দীর্ঘ তেইশ বছর ফুটবল-মাঠে রাজার মতো বিচরণ করেছেন জাদুকর সামাদ। কলকাতা মোহামেডান ও মোহনবাগানের হয়ে খেলে মাঠ মাতিয়েছেন অসংখ্যবার। সর্বভারতীয় একাদশের হয়ে বিদেশি বিভিন্ন দলের বিরুদ্ধে দেশে এবং দেশের বাইরে খেলেছেন বহু অসাধারণ খেলা।

১৯২৭ সালে সিমলার ডুরান্ড কাপের এক খেলায় শের উড ফরেস্টের বিরুদ্ধে এক অসাধারণ গোল করেন তিনি। শের উডের গোলরক্ষক হতবাক হয়ে বলেন, ‘এমন কুশলী ফরোয়ার্ডের সঙ্গে আমি আগে কখনো খেলিনি।’ ভারতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে জীবনের শেষ খেলা খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের সার্ভিসেস একাদশের বিরুদ্ধে ১৯৩৬ সালে।

আরও পড়ুন >>> ফুটবলে বাংলাদেশ কোথায়? 

সামাদের অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখে ইংল্যান্ডে তৎকালীন সেরা লেফট আউট কম্পটন চমকে উঠেছিলেন, ‘ধারণা ছিল না এমন খেলোয়াড় এদেশে দেখতে পাবো!’ আর ইংল্যান্ডের এক সময়কার কৃতি ফুটবলার এলেক হোসি একবার বলেছিলেন, ‘বিশ্বমানের যেকোনো ফুটবল দলে খেলবার যোগ্যতা সামাদের রয়েছে।’

সামাদের খেলা যারা দেখেছেন বা যারা সামাদের সঙ্গে খেলেছেন এমন ভারতীয়দের মতামতও সামাদ সম্পর্কে আমাদের দিতে পারে স্বচ্ছ ধারণা। লন্ডন অলিম্পিকে ভারতের হয়ে ১৯৪৮ সালে ফুটবল খেলেছিলেন ভারতের দুর্দান্ত ফুটবলার সন্তোষ নন্দী। তিনি জাদুকর সামাদের খেলা সম্পর্কে বলেছেন, ‘তার সঙ্গে ফুটবল খেলার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সামাদ সাহেবকে আমি ফুটবলের ভগবান বলে মানি। ...সামাদ সাহেবের সে-সব খেলা কি ভোলা যায়? তখন আজকের মতো এত প্রচার ছিল না, ভিডিও ছিল না।

পৃথিবীর মানুষ তাই জানতেই পারল না সামাদ সাহেব ফুটবলে কী বা কতটুকু ছিলেন! ...বাইশ বছর ধরে আমিও তো বহু বিখ্যাত ফুটবলারের সঙ্গে খেললাম, কিন্তু (সামাদের মতো) দু’পায়ের মাঝে বল রেখে বাম্প করে ডজ করার শিল্প আর কখনোই দেখলাম না। এখন তো বিশ্বকাপও দেখছি। পৃথিবী যাদের নিয়ে নাচানাচি করছে সেই পেলে, প্লাতিনি, গুলিত, জিকো, সক্রেটিস, ম্যারাডোনাদেরও দেখলাম...কিন্তু সামাদ সাহেবের পায়ের সেই জাদু তাকে ছেড়ে অন্য কোনো ফুটবলারের পায়ে আশ্রয় নিলো না। সামাদ সামাদই। তিনি অদ্বিতীয়।’

সর্বভারতীয় ফুটবল দলের আরেক সদস্য ল্যাংচা মিত্র। তিনি বলছেন, ‘তার (অর্থাৎ সামাদ) সম্পর্কে কিছু বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই। মাঠে সামাদ সাহেব সবসময় ছিলেন হাসিখুশি। লম্বা দুটি পা ছিল। ...তবে সারাক্ষণই দৌড়ঝাঁপের মধ্যে থাকতেন না। বরং মাঠে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোঁফে ‘তা’ দিতেন। আর মাঝে-মধ্যে বল চেয়ে নিয়ে তার অলৌকিক সেই কাণ্ডগুলো করতেন। হ্যাঁ, অলৌকিকই আমি বলবো।’

আরও পড়ুন >>> ফুটবল তারকা : যাদের শৈশব কেটেছে দারিদ্র্যে 

জাদুকর সামাদের ইতিহাস পড়ার পর দ্রোণাচার্য বাঘাসোম-এর ‘পেলের চেয়েও সামাদ অনেক বড় মাপের ফুটবলার ছিলেন’ মন্তব্যকেও অতিশয়োক্তি বলার কোনো অবকাশ আছে বলে অন্তত আমার মনে হয় না। মনে পড়ে, পেলে (ব্রাজিলের কালোমানিক) নিজে আয়ারল্যান্ডের ফুটবলার জর্জ বেষ্ট সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ও আমার চেয়েও বড় মাপের খেলোয়াড়।’

বিশ্ব ফুটবলে আয়ারল্যান্ড কখনোই তেমন কোনো বড় শক্তি ছিল না (মাত্র সেদিন অর্থাৎ ১৯৯০ সালে আয়ারল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে)। অথচ সেই আয়ারল্যান্ড জন্ম দিয়েছিল জর্জ বেস্টের মতো একজন ‘বেষ্ট’ খেলোয়াড়ের।

পাক-ভারত-বাংলাদেশ উপমহাদেশও বর্তমানে বিশ্ব-ফুটবলে অবস্থান করছে নীচের সারিতে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, এই উপমহাদেশই জন্ম দিয়েছিল ফুটবলের জাদুকর সামাদকে। সামাদের খেলা দেখার সৌভাগ্য পেলের হয়নি। সামাদের খেলা দেখলে পেলে হয়তো অকুণ্ঠচিত্তে স্বীকার করে নিতেন তার শ্রেষ্ঠত্ব।

আগেই বলেছি, সামাদ আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ নামক দেশটির ভূখণ্ডে জন্ম নেননি। কিন্তু ১৯৪৭-এর দেশ-বিভক্তির সময় এই ভূখণ্ডকইে নিজের দেশ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। আমরা তার জন্য গর্ববোধ করি, যেমন গর্ববোধ করি কাজী নজরুল ইসলামের জন্য। নজরুলকে আমরা মর্যাদা দিয়েছি। কিন্তু সামাদকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দিতে এতো কার্পণ্য কেন আমাদের?

মৃত্যুর আগে একবার জাদুকর সামাদ বলেছিলেন, ‘আমি তো নিঃশেষ হয়ে গেছি। আমার প্রাপ্য মর্যাদা আমি পেলাম না। আমি ধুঁকে ধুঁকে মরে যাব সে-ই ভালো। কারো করুণা এবং অনুগ্রহের প্রত্যাশী আমি নই।’

আরও পড়ুন >>> ফুটবল : বাঙালির প্রেম, বাঙালির জ্বর! 

তীব্র দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত হয়ে, বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছিলেন ফুটবলের এই মহান শিল্পী; কন্তিু কারো করুণা বা দয়া নেননি। আজ, পরপারে চলে যাওয়ার পর, কোনো মর্যাদা বা সম্মানের প্রয়োজন তার নেই। তাকে মর্যাদা দিতে হবে আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে।

স্পষ্টভাষী, চরিত্রবান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী এই মহান ক্রীড়াবিদকে আমাদের এবং আমাদের ক্রীড়াবিদদের প্রয়োজন ‘রোল-মডেল’ হিসেবে। সাধনা ও অধ্যবসায়ের দ্বারা যে ক্রীড়াঙ্গনে খ্যাতির সর্বোচ্চ শিখরে ওঠা যায় জাদুকর সামাদের মতো মানুষই তো তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ!

এই ধরনের উদাহরণ আমাদের সন্তানদের সামনে থাকা কত জরুরি তা বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই। আমাদের কি উচিত নয় সম্ভাব্য সব উপায়ে আমাদের সন্তানদের সামনে তাকে রোল-মডেল হিসেবে তুলে ধরা বা তুলে ধরার চেষ্টা করা?

আলিমুল হক ।। বার্তা সম্পাদক, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)