মোবাইলে গেম কম বেশি সবাই খেলে থাকেন। যখন স্মার্টফোন ছিল না, তখনও মানুষ অবসর সময়ে বাটন ফোনে স্নেক গেম বা ব্রিক গেম খেলতেন। যেকোনো সময় গেম বন্ধ করে প্রয়োজনে আবার কাজ করতেন। কারো সাথে প্রতিযোগিতার কোনো বিষয় ছিল না। শুধুমাত্র মনের খোরাকের জন্যই খেলতেন।

এখন সবার হাতে স্মার্টফোন। গেমগুলোতে পরিবর্তন এসে গেছে। এখন অফলাইন গেমগুলোর চেয়ে অনলাইন গেমগুলো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর আমাদের তরুণ প্রজন্ম সেই অনলাইন গেমের দিকেই বেশি ঝুঁকছে।

অনলাইন গেমগুলোতে সাধারণত কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে। ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকেও খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে। এখানে হার-জিতের একটা ব্যাপার থাকে। নিজেকে সেরা প্রমাণ করার বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু অনলাইন গেমে কয়েকজন একসাথে খেলতে থাকে, সেহেতু চাইলেই কেউ গেম থেকে উঠে যেতে পারে না।

এখন সবার হাতে স্মার্টফোন। গেমগুলোতে পরিবর্তন এসে গেছে। এখন অফলাইন গেমগুলোর চেয়ে অনলাইন গেমগুলো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর আমাদের তরুণ প্রজন্ম সেই অনলাইন গেমের দিকেই বেশি ঝুঁকছে।

অনেকে এতটাই খেলার মধ্যে ডুবে যায় যে, কথা বলারও সময় পায় না। নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে গেমে ডুবে থাকে। খেলা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত একটা লম্বা সময় তাদের এই গেম নিয়ে থাকতে হয়।

শিক্ষার্থীরা এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকে রাত জেগে অনলাইন গেম নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। উপরন্তু দেখা যায়, অনলাইন অনেক গেমের পরের লেভেলে যেতে কিংবা গেমের ইকুইপমেন্ট ডলার দিয়ে কিনতে হয়, যা অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। কিন্তু তারপরেও করা হচ্ছে। কেন?

সবশেষে একটা ঘটনা ব্যাখ্যা করব। এর মধ্যেই হয়তো বুঝতে পারবেন, অনলাইন গেমের মাধ্যমে সমস্যা কীভাবে বাড়ছে কিংবা ভবিষ্যতে কীভাবে বাড়তে পারে। কয়েকদিন আগে জরুরি কাজে বাইরে বের হয়েছিলাম। দেখলাম একটা রেস্টুরেন্টের পাশে কয়েকজন অল্পবয়সী ছেলে (হয়তো স্কুল পড়ুয়া হবে) মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত।

অনলাইন গেমগুলোতে সাধারণত কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকে। ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকেও খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে। এখানে হার-জিতের একটা ব্যাপার থাকে। নিজেকে সেরা প্রমাণ করার বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু অনলাইন গেমে কয়েকজন একসাথে খেলতে থাকে, সেহেতু চাইলেই কেউ গেম থেকে উঠে যেতে পারে না।

রেস্টুরেন্টের পাশে বসার কারণ হচ্ছে, সেখানে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারছে। রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের সাথে সম্পর্ক ভালো হওয়াতে তারা পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয়। যাই হোক, পাশ থেকে যাওয়ার সময় শুনতে পেলাম, একজন আরেকজনকে বলছে, আজকে সেলিমের সাথে জিততে পারলে ১০০০ টাকা পাবো।‌ পাশেরজন বলল, সেলিম তোর আগের টাকা পাঠিয়েছে?

বুঝতে পারলাম, টাকা বাজি রেখে গেম খেলা হচ্ছে। যার সাথে খেলা হচ্ছে সেই ব্যক্তি সেখানে ছিল না। বুঝুন তাহলে অবস্থা! একে তো টাকা দিয়ে মোবাইল গেম খেলছে, তার উপর যার সাথে খেলা হচ্ছে তার অবস্থান অন্য কোনো স্থানে।

অনলাইন গেম নিয়ে আমাদের সকলের এখনই সতর্ক হওয়া উচিত। না হয় পরবর্তীতে অনলাইন গেম মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সেই ব্যথা লাঘব করা বেশ কষ্টসাধ্যই হবে।

রিয়াজুল হক ।। যুগ্ম-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক