দিন বদলের দুনিয়ায় গ্লোবাল সাউথ, প্রতিযোগিতা এখন ‘সফট পাওয়ার’ নিয়ে
ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনশীল বিশ্ব ব্যবস্থায়, বৃহৎ শক্তি এবং উদীয়মান শক্তিগুলো কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামরিক শক্তির জন্যই নয়, বরং মতাদর্শিক ক্ষমতায় (সফট পাওয়ার) এগিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় নিজের প্রভাব বৃদ্ধি এবং অন্যদের কাছ থেকে ক্ষমতার স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টাও চালিয়ে যায়। মতাদর্শিকভাবে ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে চাওয়ার এই আকাঙ্ক্ষাকেই সফট পাওয়ার বলে অভিহিত করা হয়। এই সফট পাওয়ার হলো এমন এক ধরনের ক্ষমতা যেখানে জোর-জবরদস্তি না করে আকর্ষণ ও আবেদন দ্বারা অন্যের পছন্দকে প্রভাবিত করা যায়।
ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ গোলার্ধভুক্ত ৩২টি উন্নয়নশীল দেশ; যাদের এখন গ্লোবাল সাউথ বলে ডাকা হচ্ছে, একুশ শতকের নানা জটিলতা মোকাবিলায় এই দেশগুলো যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন এসব দেশের ইতিহাস ও সভ্যতা তাদের সফট পাওয়ার অস্ত্র ভাণ্ডারে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই ইতিহাস ও সভ্যতা এসব দেশকে কৌশলগত এমন এক ভিত্তি প্রদান করছে, যা শেষ পর্যন্ত তাদের হার্ড পাওয়ারের (সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা) আকাঙ্ক্ষার পথকেই মসৃণ করছে। ভারত, চীন, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো তাদের সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক আখ্যান এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক প্রভাব ও স্বীকৃতির প্রতিযোগিতায় কীভাবে রাষ্ট্র-কেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি ব্যবহার করে, এ লেখায় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
হাজার বছরের পুরনো সভ্যতার অধিকারী ভারতের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পদের বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে। ভারত সরকার 'মৌসম প্রকল্প'-এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক ন্যারেটিভকে ক্রমবর্ধমানভাবে পুঁজি করে চলেছে। এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ভারত মহাসাগরের প্রাচীন সামুদ্রিক রুটগুলো পুনরুজ্জীবিত করা। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে থাকা ঐতিহাসিক সামুদ্রিক সংযোগের ওপর জোর দিয়ে, ভারত নিজেকে একটি ভাগ করা ইতিহাস ও সংস্কৃতির নেটওয়ার্কের কেন্দ্রীয় চরিত্রে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই উদ্যোগটি কেবল ওইসব দেশের সাথে ভারতের সাংস্কৃতিক বন্ধনকেই শক্তিশালী করে না, বরং এর অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। কৌশলগতভাবে এটি ভারতকে একটি সফট পাওয়ার প্লাটফর্মে জায়গা দেয় এবং দেশটির আঞ্চলিক প্রভাব এতে করে বাড়ে।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে (বিআরআই) মূলত একটি অর্থনৈতিক উদ্যোগ হিসেবেই দেখা হয়। কিন্তু এটি একইসাথে চীনের একটি শক্তিশালী সফট পাওয়ার কৌশলও। প্রাচীন সিল্ক রোড-এর কথা উল্লেখ করে চীন আসলে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি সুদূর অতীতের স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে তুলে ধরে চীন। বিআরআই শুধু অবকাঠামো নির্মাণ আর বিনিয়োগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি সভ্যতাভিত্তিক প্রচারণা, যার মাধ্যমে চীন তাদের ঐতিহাসিক আখ্যানকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরছে।
বিজ্ঞাপন
কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং ঐতিহাসিক কূটনীতির মাধ্যমে চীন আন্তর্জাতিক ধারণাগুলোকে নিজেদের মতো করে গড়ে তুলতে চাইছে। এর লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে নিজেকে হিতৈষী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। চীনের এই ঐতিহাসিক ন্যারেটিভ তাদের অর্থনৈতিক ও সামরিক আকাঙ্ক্ষাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি এমন একটি সুসংহত কৌশল তৈরি করে, যা একদিকে তাদের ‘সফট পাওয়ার’ বাড়িয়ে তোলে, অন্যদিকে বৈশ্বিক কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের পথ তৈরি করে। নিজেদের আধুনিক উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে এক সমৃদ্ধ অতীতের কাঠামোর মধ্যে ফেলে, চীন কার্যকরভাবে ইতিহাস ও সভ্যতাকে ব্যবহার করে বিশ্ব নেতৃত্বে নিজেদের অবস্থানকে দৃঢ় করতে চাইছে।
সফট-পাওয়ার বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। এর একটি বড় উদাহরণ হলো সিল্ক রোডের ঐতিহ্য নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে চলমান বিরোধ। ভারত বারবার চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই), যা আধুনিক সিল্ক রোড উদ্যোগ নামেও পরিচিত, তাতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর পেছনের কারণ হিসেবে অভিযোগ করা হয় যে, এই অবকাঠামো রুটগুলো কাশ্মিরের বিতর্কিত অঞ্চলের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। যদিও চীন এই যুক্তিকে একটি অজুহাত হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে ভারতের অস্বীকৃতির আরেকটি বড় কারণ হলো, তাদের বিশ্বাস যে সিল্ক রোডের ঐতিহ্য গঠনে ভারতের ভূমিকা চীনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ভারতের বিরুদ্ধে আদর্শগত পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে থাকে। চীনা সংবাদমাধ্যমের মতে, ভারত বিআরআই-কে নিছক অবকাঠামো সহযোগিতা হিসেবে না দেখে একটি ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা হিসেবে উপস্থাপন করে। এই প্রতিযোগিতা এটাই প্রমাণ করে যে, ঐতিহ্য ও উন্নয়নের ন্যারেটিভগুলো কীভাবে কৌশলগত হাতিয়ারে পরিণত হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রতিটা দেশ প্রাচীন বাণিজ্য ও সংস্কৃতি বিনিময়ের ওপর নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এটি এশিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান প্রতিযোগিতামুখি দৃষ্টিভঙ্গিকেই প্রতিফলিত করে।
অন্যদিকে, মালয়েশিয়া সভ্যতার এক ভিন্ন ধরনের মিলনস্থল হিসেবে নিজেদের তুলে ধরে। প্রধান প্রধান সামুদ্রিক বাণিজ্য পথের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায়, মালয়েশিয়ার রয়েছে সংস্কৃতি ও ইতিহাসের এক সমৃদ্ধ বুনন। এই বৈচিত্র্য মালয়েশিয়ার সফট পাওয়ার কৌশলের মূল ভিত্তি। এর মাধ্যমে দেশটি নিজেদের সভ্যতার মিলনস্থল হিসেবে তুলে ধরে। নিজেদের বহু-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে মালয়েশিয়া বিভিন্ন অঞ্চল ও সংস্কৃতির মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করছে। এর ফলে সহযোগিতা ও ঐক্যের এক চমৎকার ন্যারেটিভ তৈরি হচ্ছে, যা তাদের বৈশ্বিক ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে।
মালয়েশিয়ার এই কৌশল তাদের সাংস্কৃতিক কূটনীতির প্রচেষ্টায় স্পষ্ট। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক উৎসব, শিক্ষা বিনিময় এবং ঐতিহ্যবাহী পর্যটন। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরে মালয়েশিয়া কেবল আন্তর্জাতিক মনোযোগ ও পর্যটনই আকর্ষণ করে না, বরং নিজেদের কূটনৈতিক অবস্থানকেও শক্তিশালী করে। এই ‘সফট পাওয়ার’ কৌশল মালয়েশিয়ার বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি আঞ্চলিক প্রভাব এবং সহযোগিতার জন্য একটি মজবুত ভিত্তি তৈরি করে।
মালয়েশিয়ার মতো একইভাবে ইন্দোনেশিয়াও তার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। ইন্দোনেশিয়ার ‘গ্লোবাল মেরিটাইম ফুলক্রাম’ বা বৈশ্বিক সামুদ্রিক কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার স্বপ্ন তাদের সামুদ্রিক জাতিসত্তা হিসেবে ঐতিহাসিক পরিচয়ের গভীরে প্রোথিত। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে নিজেদের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে কাজে লাগিয়ে ইন্দোনেশিয়া ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে নিজের অবস্থানকে পুনরুদ্ধার করতে চাইছে। এই চাওয়া শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামুদ্রিক নিরাপত্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ইতিহাস ও সভ্যতা ন্যারেটিভের একটি কৌশলগত ব্যবহার, যার মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া নিজেদের ‘সফট পাওয়ার’ আরও বাড়াতে চাইছে।
ইন্দোনেশিয়া উৎসব, শিক্ষা কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মতো উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের ঐতিহাসিক সামুদ্রিক সংস্কৃতিকে তুলে ধরছে। এর ফলে দেশটি নিজেদের সমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী অতীতের অধিকারী জাতি হিসেবে উপস্থাপন করছে। এই ঐতিহাসিক ন্যারেটিভ ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান আকাঙ্ক্ষাগুলোকে সমর্থন করে, এর আঞ্চলিক প্রভাবকে শক্তিশালী করে এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের ভবিষ্যৎ গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে দেশটির অবস্থানকে দৃঢ় করে।
তবে, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ওয়ায়াং কুলিত, রিওগ পোনোরোগো নৃত্য, রাসা সায়াং লোকসংগীত-এর মালিকানা নিয়ে বিতর্ক থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়ায় মালয় ঐতিহ্যকে অস্বীকার করা, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উত্তেজনা দেখা গেছে, যা তাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ব্যাহত করেছে। তবে এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রমও ছিল, যেখানে নির্দিষ্ট কিছু ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে যৌথ সহযোগিতার সাম্প্রতিক অগ্রগতি দেখা যায়। এই অগ্রগতির মধ্যে রয়েছে কেবায়া এবং রিওগ পোনোরোগো-কে যৌথভাবে ইউনেস্কোতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এবং গামেলান-কে তালিকাভুক্ত করার জন্য ইন্দোনেশিয়ার আবেদনে মালয়েশিয়ার সমর্থন করা। এই ধরনের সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা কমিয়েছে ঠিকই কিন্তু অতীতের বিরোধগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় কীভাবে সাংস্কৃতিক প্রতীকবাদ জাতীয়তাবাদ এবং দ্বিপাক্ষিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
ইতিহাস ও সভ্যতার সম্পর্ককে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করা রাষ্ট্র-কেন্দ্রিক বিশ্ব ইতিহাসের এক নতুন প্রবণতাকে তুলে ধরে। ভারত, চীন, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো একদিকে যেমন নিজেদের ঐতিহাসিক ন্যারেটিভ ব্যবহার করে তাদের ‘সফট পাওয়ার’ বাড়াচ্ছে, একইসাথে বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের কৌশলগত অবস্থানকেও শক্তিশালী করছে। এই ধারা একইসঙ্গে একটি বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিকেও তুলে ধরে, যেখানে রাষ্ট্রগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে ইতিহাসকে প্রভাব বিস্তার ও প্রতিযোগিতার একটি যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে দেখছে।
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ন্যারেটিভগুলোর প্রচার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বোঝাপড়াকে উৎসাহিত করতে পারে, তবে এর কারণে বৈশ্বিক নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ার একটা ঝুঁকিও থেকে যায়। দেশগুলো যখন একে অপরের সাথে স্বীকৃতি ও প্রভাবের জন্য প্রতিযোগিতা করে, তখন সংঘাত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এক বিশ্বে রাষ্ট্রগুলো যখন সুবিধা অর্জনের জন্য নিজেদের ঐতিহাসিক ন্যারেটিভগুলো ব্যবহার করে, সেই প্রেক্ষাপটে, সফট পাওয়ার এবং হার্ড পাওয়ারের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও বেশি করে আলোচনায় উঠে আসে। সুতরাং, ইতিহাস ও সভ্যতার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা কেবল সমসাময়িক আন্তর্জাতিক সম্পর্ককেই প্রভাবিত করে না, বরং নিরাপত্তাহীনতা ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে বাস্তববাদের (realism) স্থায়ী প্রাসঙ্গিকতাকেও তুলে ধরে।
ই-ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্সে প্রকাশিত নিয়া ডেলিয়ানার লেখা দ্য গ্লোবাল সাউথ কনটেস্ট ফর সফট পাওয়ার অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স থেকে অনূদিত। নিয়া ডেলিয়ানা ইন্দোনেশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে শিক্ষকতা করেন।