১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১। করোনার ছোবলে বিশ্ব টালমাটাল। কঠিন সময়টাকে বেছে নিয়েছিলাম আমাদের যাত্রাশুরুর জন্য। ভয়াবহ বৈশ্বিক দুর্যোগের মধ্যেও একটি অনলাইন গণমাধ্যমের স্বপ্নযাত্রা শুরু করি। এর পেছনে ছিল গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অনুঘটক। তার মধ্যে অন্যতম হলো- স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ঐতিহাসিক এ দুই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হওয়া।

দেখতে দেখতে একটি বছর কেটে গেল। আজ ঢাকা পোস্ট পা দিয়েছে দ্বিতীয় বর্ষে। আজকের দিনটি ঢাকা পোস্ট পরিবারের জন্য খুবই আনন্দের। একটি মিডিয়ার পক্ষে আস্থার গণমাধ্যমে পরিণত হওয়ার জন্য এক বছর মোটেও যথেষ্ট সময় নয়। এ কথা আমরা বলতেই পারি, ঢাকা পোস্ট সেই অসাধ্য সাধন করেছে। আস্থার জায়গা করে নিয়েছে পাঠকের মনে। পাঠকের ভালোবাসায় ভর করেই ঢাকা পোস্ট আজ দেশের অন্যতম অনলাইন মিডিয়া।

করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্ব এখনো অনিশ্চয়তার মুখে। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় অবিরাম যুদ্ধ করছে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশগুলো। শিল্প-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা বর্ণনাতীত। নতুন করে সবকিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টায় প্রাণপণ লড়াই করছে সবাই। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত।

মহামারির মধ্যেও বিশ্বজুড়ে মিডিয়ার একটি ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন হচ্ছে। বাংলাদেশও এ পরিস্থিতির বাইরে নয়। তবে আমি বলব, বৈশ্বিক বিচারে আমরা এ যাত্রায় অনেকটা পিছিয়ে আছি। আমাদের মিডিয়া হাউজগুলো এখনো সেভাবে তৈরি হয়নি। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান এ যাত্রায় শামিল হয়েছে, অনেকে আবার শুরু করেছে। ঢাকা পোস্ট পরিবার এ যাত্রায় অনেকটা এগিয়ে আছে। মাত্র এক বছরেই আমরা চেষ্টা করেছি পাঠককে তার পছন্দের সব ধরনের কনটেন্ট উপহার দিতে

করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে মিডিয়া হাউজগুলো। বিশেষ করে ছাপা পত্রিকাগুলো। তাদের ক্ষত হয়তো কখনোই পুষিয়ে নিতে পারবে না। সার্কুলেশনে ধস এবং অস্বাভাবিকভাবে বিজ্ঞাপন কমে যাওয়ার পাশাপাশি কাগজের মূল্যবৃদ্ধি পত্রিকাগুলোর জন্য অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ টেনে এনেছে। যে কাজটি হয়তো আগামী ১০ বছর পর হতো, কাগুজে পত্রিকাগুলোকে বিস্ময়কর সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে মরণঘাতী করোনাভাইরাস।

মহামারির মধ্যেও বিশ্বজুড়ে মিডিয়ার একটি ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন হচ্ছে। বাংলাদেশও এ পরিস্থিতির বাইরে নয়। তবে আমি বলব, বৈশ্বিক বিচারে সার্বিকভাবে বাংলাদেশ এ যাত্রায় অনেকটা পিছিয়ে আছি। আমাদের মিডিয়া হাউজগুলো এখনো সেভাবে তৈরি হয়নি। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান এ যাত্রায় শামিল হয়েছে, অনেকে আবার নতুন করে শুরু করেছে। ঢাকা পোস্ট পরিবার এ যাত্রায় অনেকটা এগিয়ে আছে। মাত্র এক বছরেই আমরা চেষ্টা করেছি পাঠককে তার পছন্দের কনটেন্ট উপহার দিতে।

সরকারও অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার মধ্য দিয়ে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাচ্ছে। যা অবশ্যই একটি সম্ভাবনার দিক। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গণমাধ্যম ও আইপি টেলিভিশনকে নিবন্ধন দিয়েছে সরকার। আশা করা যায় দ্রুতই এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। অনলাইন গণমাধ্যমগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার পাশাপাশি এতে সরকারি বিজ্ঞাপন প্রকাশের ব্যবস্থা করার বিষয়টিও সরকারকে ভেবে দেখতে হবে। কারণ, অনলাইন গণমাধ্যমগুলো এখনো ভর্তুকি দিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে এটি অচিরেই মূলধারার গণমাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে।

আমরা আরও যা করতে চাই

ঢাকা পোস্ট পরিবার আগামীতে অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর আইকন হতে চায়। অনলাইন মিডিয়ায় প্রতিদিনই প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আসছে। ঢাকা পোস্ট পরিবারের চেষ্টা থাকবে সেসব পরিবর্তনকে সঙ্গে নিয়ে পথচলার। আমার বিশ্বাস, ঢাকা পোস্ট পরিবার বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর প্রচলিত ধারায় নতুনত্ব আনবে এবং টেকসই গণমাধ্যম হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ সুবর্ণ সময়ে আমরাও বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি হতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমে নেতৃত্ব দিতে চাই। দেশে এবং দেশের বাইরে আমাদের একঝাঁক তরুণ নিবেদিতপ্রাণ সংবাদকর্মী এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন

বিশ্বজুড়ে অনলাইন সাংবাদিকতায় দিনদিন নতুন মাত্রা যুক্ত হচ্ছে। বাংলা ভাষার পাঠকও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। পাঠক এখন পছন্দের পোর্টালগুলোর ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। ব্র্যান্ড ট্রাফিক বাড়ছে প্রতিষ্ঠিত নিউজ পোর্টালগুলোর। ঢাকা পোস্ট পরিবার পাঠকের পছন্দের বিষয়টি মাথায় রেখে তার ওয়ালে কাঙ্ক্ষিত কনটেন্ট পরিবেশনে আরো বেশি মনোযোগী হবে।

আমাদের লক্ষ্য হলো একটি গণমুখী ও আস্থার গণমাধ্যম হিসেবে ঢাকা পোস্টকে প্রতিষ্ঠিত করা। সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। আমরা সক্রিয় থাকব সমাজের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও সমস্যার কথা তুলে ধরতে। পাশাপাশি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনেও কাজ করবে ঢাকা পোস্ট পরিবার।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ সুবর্ণ সময়ে আমরাও বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি হতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে মিডিয়াপাড়ায় নেতৃত্ব দিতে চাই। দেশে ও দেশের বাইরে আমাদের একঝাঁক তরুণ ও নিবেদিতপ্রাণ সংবাদকর্মী এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী হিসেবে আপনার অকুণ্ঠ সমর্থন আমাদের প্রেরণা জোগাবে আগামী দিনগুলোতে।

মহিউদ্দিন সরকার ।। সম্পাদক, ঢাকা পোস্ট