দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গতকাল বাম জোট যে হরতাল ডেকেছিল সে সম্পর্কে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাম ভাইদের হরতালের সময় গতকাল ঢাকা শহরে প্রচন্ড ট্রাফিক জ্যাম ছিল। বাম ভাইদের আমি সম্মান করি, কারণ তারা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কিন্তু তারা কেন হরতাল করে জনগণের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি করলেন সেটাই আমার প্রশ্ন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড দিয়েছেন। এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড মানে পাঁচ কোটি মানুষ। বাজারে দ্রব্য মূল্যও কমে গেছে। দ্রব্য মূল্য কমায় জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। জনগণের মধ্যে যখন স্বস্তি ফিরে এসেছে তখন বিএনপির অস্বস্তি বেড়ে গেছে। তারা সেজন্য বাম-ভাইদের দিয়ে হরতাল ডাকালেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিএনপি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, সারা দেশে প্রকৃতপক্ষে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বিএনপি আছে শুধু টেলিভিশনের পর্দায়। টেলিভিশনের সাংবাদিকরাই মূলত বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। বিএনপিকে টেলিভিশন ছাড়া কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে দুয়েকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশে আবার নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর কিছু কিছু পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়, তখন বিএনপি সারা দেশে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে তারা দ্বিচারিতার নীতি অবলম্বন করেছে। একদিকে মজুদদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিয়েছে পণ্য মজুদ করার জন্য এবং পণ্যের মূল্য বাড়ানোর জন্য, অন্যদিকে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ে বিএনপি সারাদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। বিএনপির কাজটাই হচ্ছে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। আপনারা দেখেছেন যখন পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয় তখন বিএনপি বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়েছিল। এই পদ্মাসেতু করতে পারবে না বলে তারা নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। আজকে পদ্মাসেতু হয়ে গেছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এপার থেকে ওপারে গেছেন।

রাঙ্গুনিয়ায় আওয়ামীলীগ শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জনগণকে মনে করিয়ে দিতে হবে ১৩ বছর আগে দেশের কী পরিস্থিতি ছিল। এখন প্রতিটি ইউনিয়নে দেড়-দুই হাজার মানুষ ভাতা পাচ্ছে।

তিনি বলেন, কারও মেয়ে স্কুলে গেলে এখন তার কাছে মোবাইল ফোনে টাকা চলে আসে, এসব আগে ছিল না। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে এভাবে দেশ এগিয়ে গেছে। এই কথাগুলো জনগণের মাঝে আমাদের নেতাকর্মীদের মনে করিয়ে দিতে হবে, প্রচার করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এখনও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। আগামী নির্বাচনেও ইনশাআল্লাহ সারা দেশে আমাদের ভূমিধস বিজয় নিশ্চিত হবে। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতি, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা আ.লীগের সভাপতি মাষ্টার আসলাম খাঁন প্রমুখ।  

কেএম/এনএফ