বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই সরকার হটানোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাজারবাগের হোয়াইট হাউজ রেস্টুরেন্টে নাগরিক ঐক্যের ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় একথা জানান তিনি।

‘বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনকে না বলুন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। তবে জামায়াতে ইসলামীর কাউকে এ ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। এর সঙ্গে আমরাও একমত পোষণ করছি। দেশের যে পরিস্থিতি, যে অবস্থা, তাতে এখন সময় এসেছে সরকারকে না বলা।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারকে বিদায় দেওয়ার জন্য আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আসুন এ স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে দেশের জনগণকে মুক্ত করি। আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য যে কর্মসূচি প্রয়োজন হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেই।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল, আওয়ামী লীগ তাকে হত্যা করেছে। আজ ৫০ বছরেও দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। একটা কথা পরিষ্কার, আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি, কেউ বর্তমানের সরকারের অধীনে নির্বাচন করব না, এ প্রশ্নে কোনো দ্বিমত নাই। আমাদের কথা স্পষ্ট এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সেজন্য এদেরকে হটাতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প পথ নেই।

তিনি আরও বলেন, এ সরকারকে বিদায়ের পর কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, তা আমাদের আগেই ঠিক করতে হবে। সেই সরকারকে অবশ্যই এমন হতে হবে, যারা নিরপেক্ষ ও অবাধ একটি নির্বাচন করতে পারবে। সেজন্যই জেএসডি মনে করে, একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার যেভাবে প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেজন্য একটা জাতীয় সরকার দরকার হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা যারা কথা বলেছেন সবার কথার মধ্যে এ প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে যে, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। আমরা যাব না। এ সরকার চলে যাওয়ার পর যে সরকার হবে, সেটা তো নির্বাচিত সরকার নয়।

তিনি আরও বলেন, এই সরকার কেমন হবে— কেউ জাতীয় সরকার বলছেন, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলছেন, কেউ বলছেন তদারকির সরকার।  সরকার পক্ষের মিডিয়াগুলো মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াবার চেষ্টা করছে। আমরা একটা ম্যাসেজ দিতে চাই, আমরা যে নামেই ডাকি না কেন একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাই, যে সেই সরকার পরবর্তী নির্বাচনকে সুগম, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণফোরামের মোস্তফা মোহসিন মন্টু, গণঅধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণ সংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ। 

এএইচআর/আরএইচ