২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ১৩ দফা দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সেদিন সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর ছয়টি প্রবেশপথ অবরোধ করেন। 

দিনভর চলে ভাঙচুর, শত শত স্থাপনায় করা হয় অগ্নিসংযোগ। দিনব্যাপী দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ অভিযানের মধ্য দিয়ে ভোরে শেষ হয় হেফাজতের সেদিনের তাণ্ডব।  
 
নয় বছর আগের এ দিনে পূর্বঘোষিত ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করতে ভোর ৫টা থেকেই ঢাকার প্রবেশপথগুলো দখলে নেন হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। গাবতলী বাস টার্মিনাল, টঙ্গী, কাঁচপুর ব্রিজসহ রাজধানীকে ঘিরে ছয়টি প্রবেশমুখে অবরোধ তৈরি করেন তারা। সারাদেশের বিভিন্ন কওমি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা রাজধানীর শাপলা চত্বরে এসে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে শাপলা চত্বর এলাকা পুরোটা দখলে নিয়ে নেন তারা।

চলে অংগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর। দিনভর হেফাজতের নেতারা তাদের বক্তৃতায় আল্টিমেটাম দিতে থাকেন। ওই দিন বিকেলে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ধানমন্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সে সংবাদ সম্মেলনে হেফজতে ইসলামকে বিকেল ৫টার মধ্যে কর্মসূচি শেষ করতে বলা হয়।

সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের পরপরই শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ থেকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন হেফাজতের নেতারা। রাত নামতে থাকলেও শাপলা চত্বরে অবস্থান অব্যাহত রাখে হেফাজতে ইসলাম।

রাত ১টার দিকে হেফাজত নেতাকর্মীদের সরাতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে কমলাপুর স্টেশনে যাওয়ার রাস্তা ও বঙ্গভবনের দিকে যাওয়ার রাস্তা খোলা রেখে দৈনিক বাংলা মোড়, দিলকুশা, ফকিরাপুল ও নটরডেম কলেজের সামনে অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা।

তারা হেফাজতের নেতাকর্মীদের শাপলা চত্বর ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানান। রাত পৌনে ৩টার দিকে শুরু হয় মূল অভিযান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছুড়তে ছুড়তে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। ভোর ৫টা নাগাদ অভিযান শেষে হয়, নীরব হয়ে পড়ে শাপলা চত্বর।

এএসএস/আরএইচ