বিএনপির চলমান বৃহত্তর ঐক্য গঠনের চেষ্টায় ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, যারা এই স্বৈরাচারী সরকারকে সমর্থন করে না ও তাদেরকে বিরোধিতা করে এবং গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক সেসব দল-ব্যক্তিকে নিয়ে একটা জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা আনন্দিত এতে অনেক সাড়া পাচ্ছি। তার চেয়ে বেশি আনন্দিত জনগণের মধ্যে বেশি সাড়া পেয়েছি।

শনিবার (৪ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, জনগণ আজ বেশি ঐক্যবদ্ধ। শুধুমাত্র রাস্তায় নেমে কার্যকর আন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ বিনির্মাণের ইতিহাসকে বিকৃত করে মিথ্যা ইতিহাস প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন খন্দকার মোশারফ। তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের স্কুলের পাঠ্য বইয়ে তাদেরকে মিথ্যা ইতিহাস শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

দেশে গণতন্ত্র নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আর গণতন্ত্র না থাকলে কোনো দেশে মানবাধিকার থাকে না। আমাদের দেশে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা, নির্যাতন ও খুন- এসব গত ১২ বছরে যেভাবে চলেছে- এর উদাহরণ পৃথিবীতে কোথাও নেই।

তিনি আরও বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কটের নির্বাচন ছিল। ১৫২ আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। সুতরাং জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয়নি। তারপরে ২০১৮ সালে নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করেছে। আবার নতুন করে তারা ষড়যন্ত্র করছে। আগামীতে তারা আরেকটি পদ্ধতি নিয়েছে, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। এবার ইভিএম যন্ত্রের মধ্যে চিপ ঢুকিয়ে দিয়ে আরেকটা কারচুপি করার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।

দেশ একটা নীরব দুর্ভিক্ষের মধ্যে দিয়ে চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম প্রত্যেক দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক দিনে চাল থেকে শুরু করে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি। কী পরিমাণ ঊর্ধ্বগতি, আমাদের এখানে এটা নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। মূল্যস্ফীতি একদিকে, অন্যদিকে টাকার মান কমে যাচ্ছে! এটা কিসের জন্য। এই দুঃশাসনের জন্য। 

সিন্ডিকেট করে সরকার টিকে আছে বলে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যও আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের হাতে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট। তাই আওয়ামী লীগ সরকার এটাকে কোনো দিন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। আজ সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মানুষ এই সরকারে প্রতি বিক্ষুব্ধ। এই সরকারের প্রতি তারা আস্থা হারিয়েছে। জনগণ শিগগির এই সরকারের পতন চায়। 

এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ।

এএইচআর/ওএফ