বানভাসীদের জন্য ত্রাণের অর্থ সংগ্রহ করতে সাধারণ জনগণের সহযোগিতা নেবে বিএনপি। ২৩ জুন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করবে দলটি।

মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতাদের  সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দলের ত্রাণ কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

তিনি বলেছেন,  আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী ২৩ তারিখ থেকে প্রথমে আমরা লিফলেট বিতরণ করব। লিফলেটে জনগণের কাছে আমরা ভিক্ষা চাইব। যে যা দেন, এক টাকা বা ৫০ পয়সা, সবার কাছ থেকে আমরা ভিক্ষা চাইব। পরের দিন আমরা যাব, তারা যা দেবেন তা গচ্ছিত করব।  পরে তা আমরা বন্যার্তদের কাছে পাঠিয়ে দেব।

টুকু বলেন, এটি করার মূল কারণটা হচ্ছে, আমরা জনগণের দল। ডোনেশনে ১০ জনের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার চাইতে কোটি জনের কাছ থেকে নিয়ে সাহায্য করব। জনগণ জানল যে, আমরা পার্টিসিপেট করছি। বাহক হিসেবে আমরা দিলাম। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ কার্যক্রমে অনুমোদন দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশ বন্যার্তদের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

বিএনপির ত্রাণ কমিটির এ আহ্বায়ক বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করার কাজটি সুন্দরভাবে করতে হবে। আমার ছোটবেলার কথা এখনো মনে আছে, ঢাকায় তখন ধানমন্ডির মধ্যে ছোট ছোট একতলা-দোতলা বাড়ি ছিল। আমরা বাড়ির গেটের সামনে গিয়ে লালসালু নিয়ে দাঁড়াতাম যে, বলতাম বন্যার্তদের জন্য সাহায্য দিন। বাড়ি থেকে মা-বোনেরা যা দিতেন, সেগুলো জমা করে পরে আমরা নৌকা ভাড়া করে চলে যেতাম বন্যার্তদের কাছে। এতে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ে।

টুকু আরও বলেন, বন্যার পর থেকে বিএনপি মাঠ পর্যায়ে পানিবন্দি মানুষের পাশে আছে। দলের নেতাকর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। আমাদের নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ হাজার লোককে রান্না করে খাবার খাওয়াচ্ছেন। প্রতিদিন নৌকা ভাড়া করে প্রায় পাঁচশ পানিবন্দি লোককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসছেন।

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন,  এক সিলেটের বন্যা দিয়ে বন্যা শেষ হবে না। আমরা ভাটির দেশের লোক। উজানে আসামে যতই বৃষ্টি হবে, ততই বাংলাদেশের একেকটি জেলায় পানি ঢুকতে শুরু করবে। গতকাল যেমন আমার জেলা সিরাজগঞ্জ শহরে পানি ঢুকে গেছে, গাইবান্ধায় পানি ঢুকেছে, বগুড়ার একটি অংশে পানি ঢুকে গেছে, সরিষাবাড়ি  দিয়েও পানি ঢুকেছে। পানি সারাদেশে ঢুকেছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাজটি দীর্ঘমেয়াদি। আমরা কয়েকটি কাজ করব। মানুষের জীবন বাঁচানো, পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে এনে তাদের খাবার সরবরাহ করা, বন্যার পানি নেমে গেলে তাদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা, বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষজনের রোগ-বালাই হলে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া-ইত্যাদি কাজগুলো করতে হবে। আমরা একটি কম্প্রিহেনসিভ একটি প্রোগ্রাম নিয়েছি।

মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় এ সভায় উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানও বক্তব্য রাখেন।

এএইচআর/আরএইচ