প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ বাজেট সুস্পষ্ট তদবির ও রাঘব-বোয়ালদের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার দাবি, বাজেটের সবচেয়ে দুর্বল দিক হচ্ছে শ্রম ও কর্মসংস্থান, শিল্প, পরিসংখ্যান-তথ্য ব্যবস্থাপনা, মহিলা-শিশু বিষয়ক ও আইন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দ কমানো।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। একজন নাগরিকের দৃষ্টিতে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ বাজেটের তদবির ও গতানুগতিকতা বাজেট নিয়ে ভাবনা উপস্থাপন করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কমানো মারাত্মক ভুল। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বরাদ্দ দ্বিগুণ করুন। সুষ্ঠু ভোট হয় না, সংসদ সদস্যরা আলোচনায় আগ্রহী নন, সম্ভবত তাই তাদের উন্নয়ন বাজেট বাড়েনি। বিচার বিভাগের উন্নয়ন খাতে ব্যয় বরাদ্দ কমানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষা, সেবা প্রতিষ্ঠান আয়কর ও বিবিধ শুল্ক বৃদ্ধি, ছোট হাসপাতালের আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির ওপর অত্যাধিক শুল্ক রয়েছে অথচ স্কয়ার, ল্যাবএইড, ইউনাটেড, এভারকেয়ার হাসপাতালের ওপর এ শুল্ক প্রযোজ্য নয়। এরা মাত্র ১ শতাংশ শুল্ক দিয়ে এসব যন্ত্র আমদানি করেন। এই জাতীয় নিয়মাবলী সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জাফরুল্লাহ বলেন, ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে পরিচালন ও উন্নয়ন খাতে ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যয় হবে। এরমধ্যে সুদ পরিশোধে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ, ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ জনপ্রশাসনে, ৫ দশমিক ৯ শতাংশ প্রতিরক্ষায়, ৪ দশমিক ৬ শতাংশ জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় ব্যয় হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর বলেন, দেশে দ্রব্যমূল্য যে হারে বাড়ছে সে হারে মানুষের মজুরি না বাড়ার কারণে ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস হয়েছে। তার মানে গরিব আরও গরীব হচ্ছে। এটা অন্যভাবে বললে, সমাজে একটা ভাঙন তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ যিনি মধ্যবিত্ত ছিলেন তিনি নিম্ন মধ্যবিত্তে আর নতুন দরিদ্র তৈরি হচ্ছে।

সমাজের একটা শ্রেণির লোক মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ তিনটা মেগা প্রকল্প হওয়ার দরকার। প্রথম কর্মসংস্থান প্রকল্প। শিল্পায়ন কৌশল। আরেকটি হলো পূর্ণ জীবনচক্র ভিত্তিক সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি।

তিনি আরও বলেন, জীবনচক্র ভিত্তিক সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি না থাকলে প্রতিটি দেশ পিছিয়ে পড়বে। সেটা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। যার বড় প্রমাণ হচ্ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া।

এছাড়া আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর প্রমুখ।

এএইচআর/এসএম