দেশের শিক্ষা আইন ২০২২ খসড়া কমিটিতে আলেম-উলামাদের সম্পৃক্ত করার দাবি জানিয়েছে দেশের হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তারা জানান, দেশের শিক্ষা খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের শিক্ষা খাত থেকে ইসলামকে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে।

রোববার (৩ জুলাই) হেফাজতের প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানীর পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, দেশের শিক্ষাখাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সিলেবাস থেকে ইসলামকে বাদ দেওয়ার জন্য সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে  ইসলাম বিরোধী শক্তিগুলো। তারা সুকৌশলে দেশের শিক্ষাখাত থেকে ইসলামকে মুছে ফেলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও শিক্ষানীতিতে ইসলামকে হটিয়ে হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করানোর চেষ্টা চালিয়েছে একটি দল। সেবার শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলামসহ দেশের ইসলামপন্থী তৌহিদী জনতার প্রতিবাদের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় ষড়যন্ত্রকারীরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার অজুহাতে গত দুই বছর ইসলাম শিক্ষার পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শোনা যাচ্ছে নতুন শিক্ষানীতিতে ইসলাম শিক্ষাকে বাদ দিয়ে কথিত নৈতিক শিক্ষা প্রবেশ করানো হচ্ছে। পাঠ্যপুস্তক ও জাতীয় শিক্ষাক্রম থেকে ইসলামী শিক্ষাকে সংকুচিত করা চরম উদ্বেগজনক বিষয়।

বিবৃতিতে হেফাজত নেতারা বলেন, এমনিতে সব ক্ষেত্রে মূল্যবোধহীনতার চর্চা বেড়েছে। মূল্যবোধহীনতার মূলে ধর্মীয় শিক্ষার অভাব অন্যতম কারণ। এমন পরিস্থিতিতে নাগরিকদের নৈতিকভাবে বলীয়ান করার জন্য ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার পরিধি যখন আরও বাড়ানো জরুরি, তখন তা আরও সংকুচিত করা অযৌক্তিক ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত হবে।

হেফাজত নেতারা বলেন, আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কোনোদিনও পাঠ্যসূচী থেকে ইসলামকে বাদ দেওয়া তো দূরের কথা, কল্পনা করার দুঃসাহস দেখানো উচিৎ হবে না। এ দেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। মুসলমানের সন্তানদের মৌলিক অধিকার ইসলাম সম্পর্কে জানা ও ইসলামী জ্ঞান হাসিল করা।

তারা বলেন, আমরা এর আগেও দেখেছি শিক্ষানীতি তৈরির নামে ইসলাম বিদ্বেষী একটি দল পাঠ্যসূচির মধ্যে ইসলামকে হটিয়ে হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করানোর চেষ্টা করেছে। এবারও আমরা এই ধরণের আভাস পাচ্ছি। তাই আমাদের দাবি হচ্ছে, শিক্ষা আইনের খসড়া কমিটিতে অবশ্যই আলেমদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। খসড়া কমিটির পক্ষে দেশের বিজ্ঞ আলেম-উলামা ও ইসলামী স্কলারদের সঙ্গে মতবিনিময়ের আয়োজন করতে হবে। তাদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করতে হবে। 

এমন কোন বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না, যা ইসলাম ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চিন্তা-চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সম্পূর্ণ আলাদাভাবে ইসলাম শিক্ষাকে রাখতে হবে। ইসলাম শিক্ষার জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগে করতে হবে। পূর্ণ নম্বরে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ক পরীক্ষা নিতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে এদেশের ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতা কখনোই তা মেনে নেবে না।

কেএম/আইএসএইচ