নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হলে বিএনপির অংশগ্রহণ দৃশ্যমান হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার থাকতে হবে। তা না হলে স্বর্গ থেকেও যদি নির্বাচন কমিশনার নিয়ে আসেন, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারবেন না।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) গুলশানে চেয়ারপারসনর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সোমবার (৪ জুলাই) রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নির্বাচনকালীন সরকার বাস্তবায়ন করা কঠিন কি না?— সাংবাদিদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, কঠিন হবে কেন? ইতোমধ্যে তো আমরাই করেছি এটা। আমাদের নেতা খালেদা জিয়া সংবিধান সংশোধন করে জনমত মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সংবিধানে যুক্ত করেছেন। এটা ইচ্ছা ও কমিটমেন্টের ওপর নির্ভর করছে। জনগণের প্রতি আপনার কমিটমেন্ট থাকলে তো কঠিন নয়।

মির্জা ফখরুল আর বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে সরকার বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বানভাসি মানুষের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাতে পারেনি। বিশেষ করে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন সরকারের কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান নয়। অবিলম্বে দুর্গত মানুষের মাঝে খাদ্য, বস্ত্র, গৃহ নির্মাণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানানো হয়। 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইডিএফ’ নাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারের শীর্ষ মহলের ঘনিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ দেওয়ার ফলে প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৪ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। ওই ধরনের প্রায় সবটাই (ফোর্সড লোন অধিকাংশই রাষ্ট্রয়ত্ব ব্যাংকের) পর্যবসিত হয়েছে। আইএমএফ এ ধরনের ঋণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অন্তর্ভুক্ত না করতে বলেছে। এ সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার অবয়বে আর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সরকার অর্থনীতির সব নিয়ম কানুন ভঙ্গ করে, রিজার্ভের সব বিধি-বিধান ভঙ্গ করে শুধুমাত্র নিজেদের ঘনিষ্ট এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের লাভবান করার জন্য রাষ্ট্রের এই ভয়াবহ ক্ষতি করে চলেছে।

‘ইডিএফ’ ঋণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করে বিদেশের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি, ব্যবসা, স্থাপনা তৈরি করে দেশের অর্থনীতির ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব সামাজিক, অর্থনীতি ও সমগ্র অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে ফেলবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। আমাদের স্থায়ী কমিটির সভায়, এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

এএইচআর/এসএম