আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেছেন, আমি আর শেখ কামাল একসঙ্গে ঢাকা কলেজে পড়াশোনা করেছি। ঢাকা কলেজের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছাত্র ছিলেন শেখ কামাল। তার ব্যবহার ছিল অমায়িক। তার মাঝে ছিল নেতৃত্বের সব গুণ।

তিনি বলেন, শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে মুক্তিবাহিনীকে পরিচালনা করেছেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে শেখ কামাল সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের শেখ কামালের মতো সাহসী ও দেশপ্রেমিক হতে হবে।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারুক খান এসব কথা বলেন। 

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

ফারুক খান বলেন, ঢাকা কলেজে থাকা অবস্থায় পাকিস্তান শিক্ষা সপ্তাহের অনুষ্ঠান ছিল ঢাকা কলেজে। আমরা জানতে পারি মোনায়েম খান ঢাকা কলেজে আসবেন। তখন শেখ কামাল আমাকে বলেন, মামা মোনায়েম খানের অনুষ্ঠান আমরা ঢাকা কলেজে হতে দেব না। সেদিন হাতে কালো পতাকা নিয়ে শেখ কামাল মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ সারা বিশ্বের রোল মডেল। বিশ্বের সব বড় বড় প্রতিষ্ঠান বলছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে— এভাবে যদি আরও ৪/৫ বছর এগিয়ে যায়, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৩তম অর্থনীতির দেশ হবে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। বিএনপি নেতারা প্রতিদিন অর্থনীতি নিয়ে গুজব রটাচ্ছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্দেশে কর্নেল ফারুক খান বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আজ একটি শক্তিশালী সহযোগী সংগঠন। আপনারা ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত শেখ কামালের মতো সাহসিকতার  সঙ্গে বিএনপি জামাতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। শেখ হাসিনাকে ২০০৭ সালে আটকের পর আপনারা যে আন্দোলন করেছেন, তা সারাদেশ দেখেছে। আপনাদের শেখ কামালের মতো সাহসিকতার সঙ্গে সব কাজ করতে হবে। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, শহীদ শেখ কামাল একজন বিনয়ী ও নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি সফলতার  সঙ্গে পড়াশোনা শেষ করেছেন। কিন্তু ঘাতকদের বুলেটের আঘাতের কারণে তিনি তার সফলতাটুকু দেখিয়ে যেতে পারেননি। আজকের এ দিনে আমরা তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এ ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাসহ তার পরিবারের যে ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের প্রতি আমরা গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। 

তিনি  বলেন, শহীদ শেখ কামালের আদর্শ আজকের তরুণ প্রজন্মের গ্রহণ করা উচিত, কারণ তিনি শুধু একজন ভালো ছাত্রই ছিলেন না, একজন ভালো ছাত্রনেতা ও দক্ষ সংগঠক ছিলেন। তিনি শুধু ছাত্র রাজনীতি করেননি তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। তিনি ক্রীড়া নিয়ে ব্যাপক কাজ করেছেন।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আমজাদ খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, আব্দুল্লাহ আল সায়েম, আ ফ ম মাহবুবুল হাসান, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল প্রমুখ।

 

এইউএ /আরএইচ