কেউ আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে চাইলে তাদের উপযুক্ত জবাব দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

সোমবার রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়ি কেআইবি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।  আলোচনা সভার আয়োজন করে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ।

নাছিম বলেন, কেউ যদি দেশে খুনের রাজনীতি করে, তাদের আমরা উপযুক্ত জবাব দেব। আমরা আর হারাতে চাই না। আমরা অনেক হারিয়েছি। যারা আমাদের ওপর আঘাত হানতে চায় তাদের বলব, এটি ১৯৭৫ সাল নয়, ২০২২ সাল। কেউ যদি আমাদের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে চায়, আমরা তাদের উপযুক্ত জবাব দেব।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট আমাদের জীবনে শুধু ক্ষতের সৃষ্টি করেনি। এ দিন বারবার মনে করিয়ে দেয়, যে মানুষটি আমাদের বীরের জাতি হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো কারাগারে এবং শাসকদের হাতে অত্যাচারিত হয়ে কাটিয়েছেন, সেই মানুষকে তার সন্তানেরা আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করতে পারে।

তিনি বলেন, এটি ছিল অকল্পনীয় একটি বিষয়। যা সাধারণ মানুষের চিন্তা ছিল না, কিন্তু খুনিদের মধ্যে ছিল। তারা সেদিন বঙ্গবন্ধু পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কতটা জঘন্য হলে তারা সেদিন ১০ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেলকেও বাঁচতে দেয়নি। এটি ছিল ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ড।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাঁচানোর সব চেষ্টাই করেছে জিয়া। তাদের রক্ষায় জিয়া ইনডেমনিটি আইন জারি করেছিল। জিয়া দেশের সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি জঘন্যতম এক অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল। পরে স্বৈরশাসক এরশাদ ও খালেদা জিয়াও খুনিদের বাঁচানোর সব আয়োজন করেছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা খুনিদের বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে এসেছেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি  অসাংবিধানিক সামরিক আইন বাতিল করেন। কিন্তু অপপ্রচারকারীরা এর আগে বলে বেরিয়েছে এটি জটিল আইন, এটি বাতিল করা সম্ভব না। তারা চায়নি কখনো বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হোক।

নাছিম বলেন, জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ছিল। তিনি বলেছিলেন, আমরা ভিক্ষার জাতি হয়ে বাঁচতে চাই না। আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে চাই। সে জন্যই পাকিস্তানের আইএসআই এজেন্ট এর সাথে দেশের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিরা আঁতাত করে জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। তারা চায়নি দেশ কখনো উন্নত হোক।

তিনি বলেন, আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খুনিদের বিচার হয়েছে। কয়েকজন পলাতক আছেন, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের তৈরি হতে হবে। আমাদের জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াত এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার করে। তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অশুভ শক্তির উত্থান করে নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়। এদের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে। এদের প্রতিহত করতে হবে। বর্তমানে সারা বিশ্বেই সংকট চলছে। এ সংকট আর বেশিদিন থাকবে না। আমরা আরও উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাব।

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের মহাসচিব কৃষিবিদ মো. খায়রুল আলম প্রিন্সের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব কৃষিবিদ এম. আমিনুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের সহ-সভাপতি কৃষিবিদ প্রফেসর এ. কে. এম. সাইদুল হক চৌধুরী।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ সভাপতি কৃষিবিদ ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সাবেক মহাসচিব কৃষিবিদ মো. মোবারক আলী, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মসিউর রহমান হুমায়ূন প্রমুখ।

এইউএ/আরএইচ