তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ঠান্ডা মাথার খুনি। সকালবেলা নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে তিনি সই করতেন।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে আমরা বিশ্বাঙ্গনে নিয়ে যাব। যারা মানবাধিকারের কথা বলে এদেশে প্রোপাগান্ডা ছড়ায় তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা হবে।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে দীপ্ত টেলিভিশন নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, আজ দাবি উঠেছে কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমান সেনা ও বিমানবাহিনীর যে অফিসার ও জওয়ানদের হত্যা করেছিলেন সেই সত্য উন্মোচন করে জাতির কাছে জানানোর। আমি এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।

তিনি বলেন, আজ এখানে যারা বক্তব্য রেখেছেন তারা জানেন না তাদের বাবা  কিংবা স্বামীর কবর কোথায়। কখন ফাঁসি হয়েছে, কিভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই জবাব খালেদা জিয়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের কাছে চাই।

তিনি আরও বলেন, যে অজানা কান্নাগুলো হারিয়ে গিয়েছিল, যে কথাগুলো জাতি জানত না, যারা দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বোবা-কান্না নিয়ে বুকের মধ্যে চেপে রেখে দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছিলেন, যারা অব্যক্ত বেদনার কথা মানুষের সামনে বলতে পারেননি, যাদের কান্না নিজের পরিবারও অনেক ক্ষেত্রে শোনেনি, আজ তাদেরকে জড়ো করে জিয়াউর রহমানের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার কাহিনী জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে দীপ্ত টেলিভিশন, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

মন্ত্রী বলেন, আজ মানবাধিকারের কথা বলে নয়াপল্টনের অফিস ও প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির তত্ত্বাবধানে মির্জা ফখরুলসহ দলের নেতারা বক্তৃতা করেন। ৪৫ বছর ধরে জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবারগুলোর কান্নার জবাব বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে চাই।

ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার অফিসার এবং জওয়ানকে হত্যা করেছেন। আমাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করেছেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন। দিনের পর দিন মার্শাল ল দিয়ে দেশ শাসন করেছেন।

তিনি বলেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে হত্যার যে দৃশ্য, তা দেখার মতো নয়। রাজনীতির নামে বিএনপি এমন নৃশংসতা চালিয়েছে, এসবের জন্য বেগম খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা দায়ী। এসব কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় ?  আজকে তারা মানবাধিকারের কথা বলে। 

‘মায়ের কান্না’ ও দীপ্ত টেলিভিশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, দীপ্ত টেলিভিশনের সিইও এবং ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রামাণ্যচিত্রের পরিচালক ফুয়াদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, দীপ্ত টিভির সিইও ফুয়াদ চৌধুরী, মায়ের কান্না সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনসহ ১৯৭৭ সালে গুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।

কেএম/আরএইচ