প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ইভিএম কেনার সিদ্ধান্তকে ‘গরিবের ঘোড়া রোগ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো.মুজিবুল হক চুন্নু। 

তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতার পরও ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। অবিলম্বে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।  

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে পল্লীবন্ধু পরিষদের সঙ্গে এক মতবিনিয়ম সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচন কমিশন। কমিশনের প্রত্যেককে আমরা চিনি। এরা সবাই আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভালো নিয়োগ, প্রমোশন এবং পোস্টিং পেয়েছেন। সবাই আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। 

আরও পড়ুন : ১৭ দল ইভিএমে ভোট চায়

জাপা মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনারের মতো সংবিধানিক পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া তিনি নিয়োগ দিতে পারেন না। তাই, আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরাই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশই ইভিএমে নির্বাচন বন্ধ করেছে। ভারতেও সমালোচনা হচ্ছে ইভিএমে নির্বাচন নিয়ে। ভারতের কংগ্রেস ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর ইভিএমে ভোট করবে না। সারা বিশ্বেই ইভিএম নিয়ে সমালোচনা ঝড় বইছে, কিন্তু আমাদের নির্বাচন কমিশন প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কিনতে উঠে পড়ে লেগেছে।  ইভিএমের কোনো দোষ নেই, কিন্তু যারা পরিচালনা করবে তাদের তো দোষ আছে। তাছাড়া, ইভিএমে অনেক সময় আঙুলের ছাপ মেলে না। এতে ঝামেলা হয়, ভোট গ্রহণে বিলম্ব হয়।

দেশের মানুষ এখনও ইভিএমে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয় উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, তাছাড়া দেশের মানুষ মনে করে, ইভিএম হচ্ছে নীরবে ভোট কারচুপির মেশিন।

জাপা মহাসচিব বলেন, সরকারের শরিক কিছু দল বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে ইভিএম চেয়েছে। আর দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ ইভিএমে ভোটের বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। যদি রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের মতামতের গুরুত্ব না থকে, তাহলে কেন আমাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করলেন? নির্বাচন কমিশনের আচরণ প্রমাণ করে তারা নিরপেক্ষ নয়। 

আরও পড়ুন : সংসদ নির্বাচনে অর্ধেক আসনে ইভিএম

নির্বাচন কমিশনের বিবেক ও দেশপ্রেম নেই দাবি করে চুন্নু আরও বলেন, যখন ডলারের অভাবে জ্বালানি তেল কিনতে পারে না দেশ, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধগতির কারণে দেশের মানুষের141926 হিমশিম অবস্থা। দেশের মানুষ বাজার করতে পারে না। ওষুধ ও শিশুখাদ্য কিনতে পারছে না। এমন বাস্তবতায় প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম মেশিন কেনার কোনো যুক্তি নেই। সরকার মানুষের কষ্টের টাকায় ইভিএম না কিনে এক কোটি দুঃস্থ ও বেকারকে সহায়তা করতে পারে। 

মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. নুরুল আজহার। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, মুনিম চৌধুরী বাবু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন খান প্রমুখ।

এএইচআর/এনএফ