আওয়ামী লীগের কর্মীদের সংযত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। 

বিএনপি আওয়ামী লীগকে রাস্তায় পরীক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা রাজপথে মল্লযুদ্ধ করতে চাই না। আমাদের কর্মীদেরকে সংযত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি বলেন, বিএনপি তো রাজপথেই আছে। রাজপথে থাকতে গিয়ে তারা ২০১৩-১৪-১৫ সালে রাজপথের গাছপালা পর্যন্ত উপড়ে ফেলেছে, পুলিশবক্স ভাংচুর করেছে। আমরা চাই তারা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করুক।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। আমরা যদি আজ আমাদের নেতাকর্মীদের সারাদেশে রাজপথে নামার জন্য নির্দেশ দিই, তখন অন্য কাউকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। 

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আসলে চায় একটা সাংঘর্ষিক রাজনীতি। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে সংঘর্ষ করা, পুলিশের  সঙ্গে সংঘর্ষ করা, মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষ করা। তারা চায় যাতে আরও প্রাণহানি ঘটে। আমি কিছু ভিডিও ক্লিপ দেখেছি। যদিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি, কিন্তু অনেকেই বলেছে মুন্সীগঞ্জে যে ছেলেটি মারা গেছে, সে তাদেরই ইটের আঘাতে মারা গেছে। 

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যখন সমাবেশ করতে গিয়ে নিজেরা নিজেরা মারামারি করে, যখন পুলিশের ওপর হামলা করে, ভাঙচুর করে, অগ্নিসংযোগ করে, তখন জনগণ তাদের প্রতিহত করে। অতীতেও করেছে, ভবিষ্যতেও করবে। আর জনগণের সঙ্গে যদি আমাদের নেতাকর্মীরা থাকে, বিএনপি আর পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।

তিনি বলেন, বিএনপির ‘খালি কলসি বাজে বেশি’ ধরনের হুমকি-ধামকি আমরা প্রায় সাড়ে ১৩ বছর ধরে শুনে আসছি। দেশে শান্তি, স্থিতি রক্ষা সরকারের দায়িত্ব। সেটি বজায় রাখতে সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন, তা অত্যন্ত সংযতভাবে সবসময় করে আসছে।

নির্বাচন উপলক্ষে রাজনীতির ময়দান সরব হয়ে উঠছে— এমন প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের আগে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অতীতের তুলনায় বেশি সরব হবে, এটিই স্বাভাবিক এবং এটি গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চারই অংশ। সুতরাং গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা করে কেউ যদি আন্দোলন করে, সরকারের সমালোচনা করে, সরকারের বিরুদ্ধে বলে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। সেটি করতে গিয়ে যদি সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে, সেখানেই বিপত্তি।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর চলমান যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরটি এখন পর্যন্ত অত্যন্ত সফল। তার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাক্ষাৎ হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। অনেক দেশের সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী মাসের ২ তারিখ সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। আসার পর তিনি সবিস্তারে বলবেন। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে অত্যন্ত সফল একটা সফর হচ্ছে। যারা বিদেশিদের কাছে বারংবার ধরনা দেয়, সফল সফরের কারণে তাদের চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। 

এসএইচআর/আরএইচ