আওয়ামী লীগ সরকার ইভিএম দিয়ে আগামী নির্বাচনে ভোট কারচুপির ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ইভিএম মেশিন দিয়ে ভোট ডাকাতি নয়। জনগণ ভোট নিজের হাতে দেবেন। মানুষ হাতে ভোট দিতে পছন্দ করেন।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় খোন্দকার মোশাররফ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তো ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করেছে। এবার আর সেটা করা যাবে না। তাই ইভিএমে ভোট ডাকাতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইভিএম মেশিন ক্রয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএমের জন্য আট হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। অথচ দেশের মানুষ খেতে পারে না। আজ প্রায় দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা।

আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, বিবিসির সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছেন আগামী নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে? প্রশ্নের মধ্যেই রয়েছে যে গত নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী উত্তরে বলেছেন-আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু এ কথা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ দেখেছে আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালে ১৫৪টি আসনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে। একথা দেশি-বিদেশি সবাই জানে। তারপরও কীভাবে বলে দিলো যে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেশে গণতন্ত্রের সু-বাতাস বয়েছে।

এই কথা কারা বললেন, যারা ৭৫ সালে সব দলকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সবাই জানে, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনই গণতন্ত্র হত্যা করে। দেশের অর্থনীতির লুটপাট হয়। ৭২-৭৫ সালে লুটপাট হয়েছে। যার কারণে ৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়। গত ১৪ বছর কীভাবে তারা জোর করে ক্ষমতায় রয়েছে, এটাও সবাই জানে। দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রীকে আর বিশ্বাস করে না।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে, অর্থনীতি লুটপাট করেছে, ডলার লুটপাট করেছে। যার কারণে পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। তারা ক্ষমতা থাকলে দেশের অর্থনীতি যে ধ্বংসস্তূপের দিকে যাচ্ছে, এটা আর রক্ষা হবে না। তাই দেশকে রক্ষায় এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সমাবেশগুলোতে আওয়ামীলীগের হামলা প্রতিরোধ করতে দলের নেতাকর্মীরা পতাকা হাতে অংশগ্রহণ করছেন। প্রয়োজনে পতাকার সেই লাঠি আরও লম্বা করতে হবে।

বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে গুলি করা হচ্ছে দাবি করে রিজভী বলেন, তারপরও শেখ হাসিনার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তিনি নির্দ্বিধায় উচ্চবাচ্য করছেন, অসত্য কথা বলে যাচ্ছেন। এতো হত্যাকাণ্ডের পরও সাধারণ মানুষ বিএনপির আন্দোলনে সম্পৃক্ত হচ্ছে। কারণ মানুষ জেগে উঠেছে ন্যায়ের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ইডেন কলেজের ঘটনা যখন পড়ি, তখন প্রশ্ন জাগে কোন দেশে আছি? প্রধানমন্ত্রী আপনার কি টনক নড়ে না? গোটা জাতিকে কোন জায়গায় নিয়ে গেছে আপনার ছাত্র সংগঠন?

গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও বি.জে. (অব.) হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের পরিচালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, হান্নান শাহ ছেলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।

এএইচআর/এমএইচএস