বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, খালেদা জিয়াই প্রথম পূজামণ্ডপে চাল-ডাল ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলেন। এখন তো শুনি যুবলীগ-ছাত্রলীগকে পূজামণ্ডপের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাহলে দেশের পুলিশ বাহিনী কোথায় গেল? তার মানে রাষ্ট্রযন্ত্র ও পুলিশ বাহিনীর কোনো দায়িত্ব নেই। যারাই হিন্দুদের প্রতিমা ভাঙে, জায়গা দখল করে তাদের পূজামণ্ডপ পাহারার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার মানে শিয়ালকে মুরগি পাহারা দিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, জায়গা সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। দেশের হিন্দুদের ৮০ ভাগ জায়গা জমি দখল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দুর্গাপূজার সময় তারা প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। অথচ বিএনপি সবসময় সব সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে ছিল।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ছাত্র ও যুব ফ্রন্টের উদ্যোগে লাভলেনস্থ মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন হলে বস্ত্র বিতরণ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমীর খসরু। এসময় তিনি দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করেন।

আমীর খসরু বলেন, যুগ যুগ ধরে এই দেশের মাটিতে সব সম্প্রদায়ের মানুষ সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে বাস করে আসছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে একসঙ্গে আমাদের স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছি। এই দেশ নির্মাণ করতে চেয়েছি সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে। কিন্তু বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে আমরা গণতান্ত্রিক পরিবেশে বেঁচে থাকার অধিকারগুলো সত্যিকার অর্থে ভোগ করতে পারছি না।

আরও পড়ুন: ‘সুষ্ঠু নির্বাচন যেন না হয় সেজন্য উঠে পড়ে লেগেছে আ. লীগ’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলতে কিছুই নেই। আমরা সবাই এক, আমরা সবাই বাংলাদেশি। দেশের সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে। বিএনপি সেটাকে ধারণ করে। আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করি না। যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তারা সেটাকে ধারণ করে না। যে ধারণ করে না তাকে বারবার এটা পালন করার জন্য বলতে হয়। বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে যারা বাস করে তারা সবাই বাংলাদেশি। সুতরাং এখানে রাজনীতিতে হিন্দু না মুসলিম এই পরিচয়ের রাজনীতি নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয় শক্তির জন্য। অসুরের যে শক্তি তাকে বদ করার জন্যে। অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই উপাসনা। সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং সব রকমের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আরাধনা। এটা বাংলাদেশের সার্বজনীন পূজা। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ ধর্ম সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ছাত্র ও যুব ফ্রন্টের সভাপতি প্রকৌশলী সন্জয় চক্রবর্তী মানিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অর্জুন কুমার নাথের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, সুশীল বড়ুয়া।

বিশেষ বক্তা ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ছাত্র ও যুব ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি জয়দেব রায় জয়। বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন প্রমুখ।

কেএম/এসএসএইচ