আগামী ২৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) যশোরে জনসভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। ওই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জনসভা হতে যাচ্ছে। যশোর জেলা স্টেডিয়ামের এ জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা করছেন খুলনা বিভাগের আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।  

যশোরের জনসভা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. সাইফুল ইসলাম। জনসভার প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের এখনকার করণীয় বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে আলাপচারিতায়।

ঢাকা পোস্ট : যশোরের সমাবেশ আপনারা কতটা প্রস্তুত?
বিএম মোজাম্মেল হক : আমাদের ভালো প্রস্তুতি চলছে। ২৪ নভেম্বরের সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হবে। যশোরের মানুষের ঢল নামবে এখানে।

ঢাকা পোস্ট : যশোরের সমাবেশে কত সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতির পরিকল্পনা করছেন?
বিএম মোজাম্মেল হক : এটি জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশ। আমরা মনে করি এই সমাবেশে আশপাশের জেলা মিলিয়ে ৫ লাখ মানুষের সমাগম হবে। জনতার ঢল নামবে ইনশাল্লাহ। বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করে না। শেখ হাসিনা আমাদের আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেত্রী। বাংলাদেশকে সম্মানের জায়গায় অধিষ্ঠিত করেছেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, বাংলাদেশের মানুষের বাতিঘর। সে কারণেই তার জনসভায় জনতার ঢল নামবে।

আরও পড়ুন >> ‘হুমকি’ দেখছে না আ. লীগ, তবু ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার চিন্তা

ঢাকা পোস্ট : যশোরের সমাবেশ দিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে কি না?
বিএম মোজাম্মেল হক : জাতীয় নির্বাচন তো সামনে আছেই। এছাড়া করোনা মহামারির কারণে গত আড়াই বছর শেখ হাসিনা গণমানুষের কাছে যেতে পারেননি, কথা বলতে পারেননি। এই প্রথম গণমানুষের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলবেন। যেহেতু এক বছর পরেই নির্বাচন, তাই প্রধানমন্ত্রী সেখানে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে পারেন।

ঢাকা পোস্ট : প্রধানমন্ত্রী এই সমাবেশ থেকে কী বার্তা দিতে পারেন?
বিএম মোজাম্মেল হক : জাতিকে বার্তা দেওয়াই আছে, সমাবেশের মাধ্যমে সেটি হয়ত স্মরণ করিয়ে দেবেন তিনি। নেত্রী বলেছিলেন ২০২১ সালের আগে একটি মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ তৈরি করা হবে। সেটি কিন্তু ২০২০ সালেই করেছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে যখন ক্ষমতায় আসেন তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৬৫৬ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে তখন মন্দা চলছিল। সেই মন্দা পেরিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অনেক উঁচু পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আজ মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮শ মার্কিন ডলার। এখন আর গ্রামের মানুষ খালি পায়ে হাটে না। এখন বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে ভাত আছে, তিন বেলা ভাত খায়। এসব বিষয় সামনে এনে প্রধানমন্ত্রী আগামী দিনেও সবাইকে আওয়ামী লীগ ও তার পাশে থাকার আহ্বান জানাবেন।

আরও পড়ুন>> প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ জয়-লেখক!

ঢাকা পোস্ট : খুলনা বিভাগে বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা কেমন?
বিএম মোজাম্মেল হক : আমাদের খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলা ১১টি। এর মধ্যে ১০টি জেলার সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। একটি বাকি আছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা। সেই জেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি র্দীঘদিন অসুস্থ থাকার কারণে চার বার সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করতে হয়েছে। এখনও তিনি দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন। তিনি সুস্থ হয়ে এলে এক সপ্তাহের নোটিশে আমরা সম্মেলন করে ফেলব। ১১টির মধ্যে ৭টি জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। জাতীয় কাউন্সিলের আগে সবগুলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

ঢাকা পোস্ট : প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যশোরের সমাবেশে যাবেন কি না?
বিএম মোজাম্মেল হক : এটা আমার জানা নেই। হয়তো যেতে পারেন, আবার নাও যেতে পারেন। জানি না, ঠিক বলতে পারব না।

ঢাকা পোস্ট: ১০ ডিসেম্বর কী হতে পারে?
বিএম মোজাম্মেল হক : কিছুই হবে না, বিরোধীদের সব ফাঁকা আওয়াজ। দুর্নীতিবাজ আর জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন লোকেরা কথা বললেন আর বাংলাদেশে বিপ্লব হয়ে গেল, এত সোজা নাকি? বিপ্লব করার জন্য ত্যাগ লাগে, মানুষের ভালোবাসা লাগে, মানুষের স্বার্থের সাথে সম্পৃক্ত কর্মসূচি লাগে, সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নে অঙ্গীকার লাগে। সুতরাং এত সস্তা নয়। একটা ফালতু কথা বলেছেন আমান উল্লাহ আমান, তার দলের লোকজনই এটাকে ভালোভাবে নেননি।

এমএসআই/জেডএস