অশুভ শক্তির পৃষ্ঠপোষক বিএনপি : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতন্ত্র বিকাশে সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলের ভূমিকা জরুরি। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ। সেই নির্বাচন আমরা জানি কী ভাবে হয়েছে। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার, ১৫ ফেব্রুয়ারির সে প্রহসনের নির্বাচন।
তিনি আরও বলেন, এগুলো এ দেশের ইতিহাসে আছে। আমরা ভুলে যাইনি। এখনও সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তি, জঙ্গিবাদী শক্তি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সক্রিয়। এদের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। বিএনপি হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা, অগণতান্ত্রিক বিশ্বাসযোগ্য ঠিকানা। গণতন্ত্র বিকাশে অন্তরায়।
বিজ্ঞাপন
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন : ‘বেখাপ্পা’ মওলানা ভাসানী
বিজ্ঞাপন
ওবায়দুল কাদের বলেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়েছে, এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না সেটা আমরা আজও জানি না। কোনো দিন জানা যাবে সেটাও এই মুহূর্তে বলা যাবে না। হোসেন সোহরাওয়ার্দী গণতন্ত্রের মানসপুত্র। গণতন্ত্রই তার জীবনের মূল ভিত্তি। তিনি বলেছেন, শাসনতন্ত্রেরপ্রশ্নে জনগণের রায়ই শেষ কথা। আজ জনগণই হচ্ছে আমাদের ক্ষমতার উৎস। বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিকাশের প্রক্রিয়া পদে পদে বাধার মুখে রয়েছে। কণ্টকাকীর্ণ পথ। এখানে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের শৃঙ্খল ঘটেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর গণতন্ত্রের জন্য তিনি লড়াই শুরু করেন। সারা দেশ ঘুরে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবোধের পক্ষে, স্বাধীনতার আদেশের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে তিনি ক্যাম্পিং করেন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রের শৃঙ্খল মুক্তি ঘটিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আমলে আমরা ৫ বছরে ৫০ দিন ঘরে থাকতে পারিনি। আমাদের নেতাকর্মীরা কেউ ঘরে থাকতে পারেনি। অপারেশন ক্লিনহার্ট, কী অবস্থা চলছিল? প্লেট চুরির অপরাধে সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা, লিটন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা, শেখ সেলিম আমাদের নেতা, সিনেমা হলে আগুন দেওয়ার অপরাধে মামলা। এসব প্রহসন এদেশে আমরা অনেক দেখেছি।
আরও পড়ুন : হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী : ইতিহাসের কৌতূহলোদ্দীপক এক চরিত্র
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ১০ ডিসেম্বর তারা সমাবেশ করবে, যে দিন বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন শুরু হয়। শহীদ সিরাজ উদ্দিন ও শহীদ নিজাম উদ্দিন দুইজনেই সাংবাদিক। এই দুইজনকে কিন্তু আলবদর বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে যায় ১০ ডিসেম্বর। বিএনপি তাদের আন্দোলন করার জন্য, কর্মসূচি ঘোষণার জন্য, ঢাকা দখল করার জন্য এই দিনটি কেন বেছে নিল আমরা জানি না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা (বিএনপি) শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুক। সমাবেশ করার অধিকার আছে। তারা কর্মসূচি ঘোষণা করুক। কিন্তু মানুষ আতঙ্কে আছে কেন? এই আতঙ্কে মানুষ থাকবে কেন? মানুষের আতঙ্ক দূর করতে হবে। বিরোধী দলের অধিকার আছে, তাই আমরা ছাড় দিয়েছি। এত দিন ছাড় দিচ্ছি কিন্তু তারা যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে, বিশৃঙ্খলা করে, জনগণের জানমালের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে সে অবস্থায় আমরা ছেড়ে দেব না। সমুচিত জবাব দেব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনিবাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজি, আজিজুস সামাদ আজাদ (ডন) ও সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম প্রমুখ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এমএসআই/এনএফ