আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমবেত হয়েছিলেন বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মী। তাদের আপ্যায়নের জন্য দলটির পক্ষ থেকে রান্না করা হয়েছিল কয়েক পাতিল খিচুড়ি। কিন্তু দুপুরের দিকে পুলিশের অভিযানের কারণে তাদের ভাগ্যে জোটেনি সেই খিচুড়ি।  

বুধবার রাত ৭টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নয়াপল্টন কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলায় বড় বড় কয়েকটি পাতিলে রান্না করা খিচুড়ি পড়ে রয়েছে। পাশের টেবিলে খিচুড়ি ভর্তি কয়েকটি বাক্সও পড়ে রয়েছে। একটু সামনের যেতেই দেখা যায়, বিএনপি কার্যালয় নিচতলায় আটটি বড় পাতিলে রান্না করা খিচুড়ি পড়ে আছে। সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে আরও ১০ থেকে ১২টি বড় পাতিল, সেগুলোতে খিচুড়ি রান্না করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

এ খিচুড়ি রান্না করা হয়েছিল কার্যালয়ে আসা নেতাকর্মীদের জন্য। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে সেই আয়োজনটি ভেস্তে যায়। 

দেখা গেছে, বিএনপির পুরো কার্যালয়ই ঘিরে রেখেছে পুলিশ। কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে কর্মীদের নিয়ে বসে আছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অপরদিকে কার্যালয়ের ভেতর থেকে একের পর এক নেতাকর্মীদের ধরে প্রিজন ভ্যানে ঢুকাচ্ছে পুলিশ।  

দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, দেখেন দেখেন সমাবেশ নেই, কিছু নেই তারপরও নেতাকর্মীরা জমায়েত হয়েছেন আবার এখানে রান্না-বান্না করেছেন। এখন পাতিলের পর পাতিল ভর্তি খিচুড়ি পড়ে আছে। 

রাত সাড়ে ৭টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আনিসুজ্জমান নামে ৭০ বছর বয়সী এক কর্মীকে যখন পুলিশ প্রিজন ভ্যানে নিয়ে যাচ্ছিল তখন মির্জা ফখরুল বলেন, আপনার এই বৃদ্ধ মানুষটাকে নিয়েন না। 

তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে তাকে ছেড়ে দেয়।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আনিসুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সমাবেশের জন্য আজ আমি কার্যালয়ে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম অন্যান্য সমাবেশের মতো এখানেও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হবে। কিন্তু দুপুরের দিকে গণ্ডগোল লেগে যায়। তারপরে রান্না করা খিচুড়ি আর খাওয়ার সুযোগ হয়নি কারো। 

অভিযান শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, মহাসমাবেশ ১০ ডিসেম্বর কিন্তু তার তিন চার দিন আগেই নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। রাস্তা দখল করে ফেলেছেন। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণের জান মাল ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য বোমাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে কার্যালয়ে অবস্থান করেন।

তিনি বলেন, বিএনপির কার্যালয় থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ১৬০ বস্তা চাল, পৌনে দুই লাখ পানির বোতল, চালসহ রান্নার উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া অবিস্ফোরিত ১৫টি বোমা পাওয়া গেছে।

এমআই/এসকেডি