গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ ঢাকা পোস্ট

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সিমেন্টের ব্যাগে করে বোমা নিয়ে গিয়ে বিএনপির কার্যালয়ে রেখে আসে। পরে তারা বিএনপির কার্যালয় থেকে বোমা উদ্ধারের নামে নাটক করে।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ গতকাল সমগ্র ঢাকা শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের সশস্ত্র ও উশৃঙ্খল কর্মীরা পাড়ায় মহল্লায় জঙ্গি মিছিল করে এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও তাদের পরিবার পরিজনের ওপর হামলা করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ওয়ারী থানার যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল মাহবুব মিজুকে বাসায় না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা মিল্লাত হোসেনকে (৬৭) বেদম প্রহার করে। যার ফলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন বলেও দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব।  

তিনি বলেন, পুলিশের গুলিতে পল্লবী থানার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মকবুল হোসেন নিহত হন এবং অসংখ্য নেতা-কর্মী ও পথচারী গুলিবিদ্ধ হন। যাদের সঠিক পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা যায়নি। এর মধ্যে আমি খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হই এবং আমাকেও অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অযাচিতভাবে প্রবেশ করে সিমেন্টের ব্যাগে করে হাত বোমা নিয়ে যায় বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, সেখানে রেখে আসে, যা বিভিন্ন মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে। এরপর দলীয় কার্যালয়ে তারা ন্যাক্কারজনকভাবে অভিযান চালিয়ে নিচতলা থেকে ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন কক্ষ তছনছ করেছে। এমনকি বিএনপি চেয়ারপার্সনের কক্ষ, মহাসচিবের কক্ষ, অফিস কক্ষের দরজা তারা অন্যায়ভাবে ভেঙে প্রবেশ করে এবং সব আসবাবপত্র, ফাইল, গুরুত্বপূর্ণ নথি, তছনছ করে। তারা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হার্ডডিক্স এবং এমনি কি দলীয় সদস্যদের প্রদেয় মাসিক চাঁদার টাকা, ব্যাংকের চেক বই, নির্বাচন কমিশন সংক্রান্তসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে যায়।

পুলিশ দাবি করছে বিএনপি কার্যালয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা তা উদ্ধারের তল্লাশি চালানোর জন্য ক্রাইম সিন ঘোষণা করে সেখানে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। অথচ আইন হচ্ছে- কোনো বাড়িতে তল্লাশি চালাতে হলে সেই বাড়ির মালিককে সঙ্গে রাখতে হবে এবং নিরপেক্ষ সাক্ষী থাকতে হবে। সাধারণত এই ধরনের তল্লাশি চালাতে হলে সার্স ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে হয়। এক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি। উপরন্ত গতকাল আমাকে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না দিয়ে বাইরে রেখে দীর্ঘ চার ঘণ্টা বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর করে, বোমা রেখে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ ও গণ-আন্দোলনে পতনের ভয়ে ভীত হয়ে দেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সরকার এবং প্রশাসনের প্রতি এমন অগণতান্ত্রিক, গণবিরোধী, সংবিধান বিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

এএইচআর/এনএফ