বিশিষ্ট সাংবাদিক, বাম রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব, শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল ও বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড নির্মল সেনের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে স্মৃতিচারণের মাধ্যমে তাকে স্মরণ করা হয়।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা আকরম খাঁ হলে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন স্বপনের সভাপতিত্বে শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল ও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

স্মৃতিচারণ ও জীবনের গল্প শুনিয়ে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেশ বিভক্তির পর নির্মল সেনের পিতা-মাতা অন্য ভাই বোনদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতা চলে যান। জন্মভূমির প্রতি অকুণ্ঠ ভালোবাসার কারণে তিনি এ দেশে থেকে যান। নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে। তিনি ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাস করেন।

তারা বলেন, স্কুল জীবন থেকে নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ভারত ছাড়ো আন্দোলনের মাধ্যমে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। দীর্ঘদিন তিনি শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মধ্য দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। তারপর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।

বক্তারা আরও বলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তার লেখা পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ, মানুষ সমাজ রাষ্ট্র, বার্লিন থেকে মস্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, আমার জীবনে ৭১ এর যুদ্ধ, আমার জবানবন্দি উল্লেখযোগ্য।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমরেড মঞ্জরুল হাসান খান, অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, প্রবীণ রাজনীতিবিদ সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খাঁন, বীর মুক্তিযোদ্ধ নঈম জাহাঙ্গীর সিনিয়র আইনজীবী এম এ সবুর, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও শ্রমিক নেতা হারুন আর রশিদ ভূইয়া প্রমুখ।

এএসএস/এসএসএইচ/