আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যাবহার করে যেসব অপকর্ম হচ্ছে এগুলো দুর্বৃত্তের কাজ। এই দুর্বৃত্তরা দলের নাম ব্যাবহার করে। এদের পরিচয় এরা দুর্বৃত্ত। এদের আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠনে থাকার অধিকার নেই। অপকর্মকারীদের শেখ হাসিনা ছাড় দেন না। প্রমাণ আছে না? বিশ্বজিৎ হত্যাকারীরা ছাত্রলীগ পরিচয়ে রক্ষা পেয়েছে? বুয়েটের আবরার হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত ছাত্রলীগ পরিচয়ে তারা ছাড় পেয়েছে? এদের কি বিচার হয়নি?

শনিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন>>বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায় বিএনপি : ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি বলেছি, এদের দল থেকে বহিষ্কার করলে হবে না, এদেরকে আইনের আওতায় আনুন। এই গুটিকয়েক দুর্বৃত্তের জন্য আওয়ামী লীগের বদনাম হতে পারে না। যারা অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধেও খেলা হবে। 

তিনি আরো বলেন, অর্থ পাচারকারীরা সাবধান। শেখ হাসিনা কঠোর হচ্ছেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা অন্যায় করবেন, অপরাধ করবেন দলের পরিচয় ব্যাবহার করে, তাদের ছাড় নেই। আমি আবারো তাদের সতর্ক করছি। আমরা এতো উন্নয়ন করছি আর গুটিকয়েক অপকর্ম করে সেটা ম্লান করবে সেটা আমরা হতে দেব না।

আরও পড়ুন>>>বিএনপি পথ হারিয়ে পদযাত্রায় নেমেছে : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভুলে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার স্লোগান এনে লাভ নাই।  একেবারেই ভুলে যান। ওই অস্বাভাবিক সরকার অসাংবিধানিক সরকার বাংলাদেশের আসবে না ইনশাল্লাহ। 
  
সরকার কেন পদত্যাগ করবেন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামা বাড়ির আবদার। কোন দোষে সরকার পদত্যাগ করবে। কি কারণে নির্বাচনের আগে সরকার পদত্যাগ করবে। কারণটা কি? হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেককে ক্ষমতায় বসানোর জন্য? ওই খাম্বা সরদার, ক্ষমতায় বসবে? বাংলাদেশের মানুষ এই খাম্বা সরদার অর্থাৎ প্রচারকারীকে এ দেশের ক্ষমতার মঞ্চে আর বসতে দেবে না। ভুলে যান ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন। কত দুর্নীতি করেছেন ভুলে গেছেন।

বছরব্যাপী প্রোগ্রাম জানিয়ে সেতু মন্ত্রী বলেন, কোনো পাল্টাপাল্টি নয়। প্রতিদিনই প্রোগ্রাম হবে। বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় হবে। কখনো সম্মেলন হবে। কখনো গণসংযোগ হবে, কখনো শান্তির সমাবেশ হবে, কখনো সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে, আওয়ামী লীগ এ কর্মসূচি নিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে। জনগণের ঘরে ঘরে যাবে। 

আরও পড়ুন>>>বিএনপির মরণযাত্রা শুরু হয়ে গেছে : ওবায়দুল কাদের

তিনি আরো বলেন, কাউকে নামতে দেব না। এ কথা বলবেন না। সবাই নামবে। রাজপথ সবার। রাস্তা সবার কিন্তু রাস্তায় নামবে ১৩ /১৪ সালের মতো ৫০০ মানুষ পুড়িয়ে মারবেন, অগ্নি সন্ত্রাস করতে রাস্তায় নামবেন। সরকারি অফিস পোড়াবেন।  রিকশা ড্রাইভার বাস ড্রাইভার পুড়িয়ে মারবেন, তা হতে দেওয়া হবে না। 

সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকুন। এ অপকর্মকারীদের দলে স্থান দেবেন না। এদেরকে এনে মিছিল বড় করার দরকার নাই। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এ মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এত অল্প সময়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। এর দ্বারা এটাই বোঝা যায় যে, মানুষ প্রস্তুত আছে, ডাক দিলেই তারা রাজপথে নামবে

তিনি বলেন, আজকের এই শান্তি সমাবেশে আমরা আবারও একটা কথা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই, আমরা ক্ষমতায় আছি, নির্বাচনের আগ যতক্ষণ জনগণ আমাদের ক্ষমতায় রাখবে। ততদিন আমরা ক্ষমতায় থাকব, ইনশাআল্লাহ। 

আরও পড়ুন>>>বাধা নয়, জনগণের নিরাপত্তার জন্য আ.লীগ কর্মসূচি দিচ্ছে

ওবায়দুল কাদের বলেন, লাফালাফি, বাড়াবাড়ি যতোই করেন, জনগণের কাছে এখনো ডাক দিয়ে সাড়া ফেলতে পারেন নাই। সংবিধান থেকে এক চুলও নড়ব না আমরা। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী, কোনো নড়ন চড়ন হবে না। 

তিনি আরো বলেন, আমরা ক্ষমতায় আছি, জনগণের জানমাল রক্ষায় আমরা পাহারাদার। জনস্বার্থে আমরা পাহারাদার। সিরাজগঞ্জে ১৮টা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে, কখন এরা আবার আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নামে, এটার জন্য আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে। আপনি আগুন নিয়ে আসবেন, পুড়িয়ে দেবেন, আমরা দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখব? এই আগুন সন্ত্রাসীদের আমরা ক্ষমতায় যেতে দিতে পারি না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুলের সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

এমএসআই/এমএ