শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় হঠাৎ করেই বক্তব্য রাখেন অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। সে কারণে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র নায়ককে ঘিরে এবার গুঞ্জন তাহলে কি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন নায়ক ফেরদৌস?

সেদিন বক্তব্যের পরপরই তাকে নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে বেশ আলোচনা শুরু হয়। তাহলে কী তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন? নাকি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার টিকিট পাচ্ছেন?- এমন কানাঘুষা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলেও।

দলীয় সূত্র মতে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তার সক্রিয়তা দেখা যায়। তারপর থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তার উপস্থিতি ছিল দেখার মতো। 

আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল থেকে শুরু করে ছোটখাটো আলোচনা কিংবা জনসভায় তাকে দেখা যায়। যদিও এতদিন তার আওয়ামী লীগে যোগদান নিয়ে তেমন কোনো গুঞ্জন ছিল না। 

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার প্রথম সারিতে বসে ছিলেন ফেরদৌস। হঠাৎ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে ডেকে বক্তব্য দিতে বলেন। তখন তিনি বক্তব্য রাখেন। 

সেসময় তিনি বলেন, আমি যেহেতু হঠাৎ বৃষ্টি দিয়ে হঠাৎ করে এসেছি, আজ আপনি হঠাৎ করে আমাকে এখানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। আপনার উদ্দেশে আমাদের সবার পক্ষ থেকে দুই লাইনের একটা কবিতা বলব। ‘তুমি আজ শুনেছো কী রাতের বাংলার খবর..., কাল সকালে বৃষ্টি হবে ভিজবে সারা শহর। ভিজবে সব দালান কোটা, ভিজবে তোমার বাড়ি। দরজাটা তুমি খোলা রেখো, আমি আসতে পারি।’

অভিনেতার বলা কবিতার শেষ লাইনকে ঘিরেই যত গুঞ্জন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘দরজাটা তুমি খোলা রেখো, আমি আসতে পারি।’ 

সেই আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় অভিনেতা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে উদ্দেশ্য এই কবিতাটি পাঠ করেন। সেখানে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদানের ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।

গত ২৪ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনের পর থেকে কয়েক ধাপে ৮১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ৭৮ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে দলটি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের একটি পদ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদকের পদ ও একটি সদস্য পদসহ মোট ৩টি পদ শূন্য রয়েছে। সেই তিন পদের মধ্যে একটিতে কী স্থান পেতে যাচ্ছেন অভিনেতা ফেরদৌস?

এদিকে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভা শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সন্ধ্যার দিকে আসেন ফেরদৌস। সেসময় তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন। এমন সময় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস আউয়াল শামীম ও কার্যনিবাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী উপস্থিত ছিলেন। 

সেখানে উপস্থিত থাকা এক নেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আলোচনা সভা শেষে ফেরদৌস আমাদের নেত্রীর কার্যালয়ে আসেন। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি ছবির বিষয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। ফেরদৌস আগামীতে কমিটিতে স্থান পাবেন কী পাবে না তা নিয়ে আলোচনা হয়নি।

এমএসআই/কেএ