বাংলাদেশে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। বৈশ্বিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এ মত তুলে ধরা হয়েছে।  

বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯৮টি দেশ ও অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বেআইনি বা নির্বিচারে হত্যা, গুম, নির্যাতন, কারাগারের অবস্থা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, রাজনৈতিক বন্দি, কোনও ব্যক্তির অপরাধের জন্য পরিবারের সদস্যদের শাস্তি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিক ভাবে গ্রেপ্তার বা বিচার, মতপ্রকাশ সীমিত করার জন্য ফৌজদারি মানহানি আইন কার্যকর, স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধ, ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিবেদন প্রত্যাশিত নয় বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন, এই প্রতিবেদন প্রত্যাশিত নয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যেভাবে লবিস্ট ফার্মের পিছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে সরকারের বিরুদ্ধে, দেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে মানবাধিকার সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, আমি মনে করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিবেদন সেখানে তারই প্রতিফলন থাকতে পারে। 

মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধ প্রসঙ্গে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ নেই কোন সংবাদ প্রচার করা যাবে, কোনটা যাবে না তার ওপর। ডিজিটাল বাংলাদেশ জন্মলাভ করেছে এই সরকারের আমলে। কিন্তু এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে - ইন্টারনেটে স্বাধীনতা নেই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই এমন সব কথা বলে। 

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন বিপ্লব বড়ুয়া। 

তিনি আরও বলেন, জনগণের রায় ছাড়া কখনও বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বাংলার জনগণ ছাড়া তিনি আর কারও কাছ থেকে কোনো ভয়ভীতি বা এ ধরনের কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। 

তিনি প্রশ্ন রাখেন- বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সময় দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। সরকারের অনেক মন্ত্রী কিন্তু দুদকের মামলায় কারাগারে গেছেন, সাজাও পেয়েছেন। অন্য সরকারের আমলে কি এমন কোনো নজির ছিল? 

তিনি বলেন, আমরা বলছি না ত্রুটি নেই। ত্রুটি আছে। কিন্তু আমাদের সরকার সেগুলো চিহ্নিত করে ত্রুটি দূর করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার জন্য সকলের কাছ থেকে সহযোগিতা প্রত্যাশা করে যাচ্ছি। 

এনএফ