জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯২তম জন্মদিন আজ (শনিবার)। ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ কুড়িগ্রাম শহরের ‘লাল দালান’ বাড়িখ্যাত নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সাবেক এ সেনাপ্রধান ও পাঁচবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি।

সাবেক এ রাষ্ট্রপতির ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জন্মদিন উপলক্ষে জাপা শনিবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করেছে। আর ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সকালে এতিমখানায় খাবার বিতরণ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কেক কাটা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন রাখা হয়েছে।

দলীয় কর্মসূচির বিষয়ে জাপা চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলওয়ার জালালী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি নির্দেশনার কারণে হোটেল সোনারগাঁওয়ে জন্মদিনের মূল অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। তবে বিকেলে কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

অপরদিকে এরশাদ ট্রাস্টের কর্মসূচিগুলোর তত্ত্বাবধান করছেন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ ও এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদ। এ দুজনকে কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছেন এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে একমাসের কর্মসূচি চলছে রংপুরের পল্লী নিবাসে। সেখানে প্রতিদিন কোরআন খতম, এতিমদের খাওয়ানো হচ্ছে।

বিদিশা সিদ্দিক আরও বলেন, জন্মদিন উপলক্ষে সকালে এতিমখানা খাবার বিতরণ ও সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট পার্কে কেক কাটা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে দলের নেতাদেরও দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।

জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শৈশব এবং স্কুলজীবন কেটেছে বাবা-মার সঙ্গে তৎকালীন ভারতের কুচ বিহারের দিনহাটায়। সেখান থেকেই তিনি এসএসসি পাস করেন। স্কুল শেষ করে তিনি রংপুরে কারমাইকেল কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পড়েছেন। পরে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন।

১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এরশাদ। ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালনকালে এরশাদ বিচারপতি সাত্তারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন। সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখলের পর গঠন করেন জাতীয় পার্টি। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মুখে নয় বছরের শাসন ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যেতে হয় সাবেক এই রাষ্ট্রপতিকে।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে তার বাবা-মা, ভাই-বোন এবং আত্মীয়-স্বজনরা পেয়ারা নামে ডাকতেন। এটি ছিল তার ডাক নাম।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোটভাই গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজো। আমাদের বড় বোনের নাম পেয়ারী এবং সেই নামের সঙ্গে মিল রেখে এরশাদের ডাকা নাম রাখা হয় পেয়ারা।

এএইচআর/এমএইচএস/এসএসএইচ