গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ নিয়ে অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল বিএনপি। এ বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর প্রায় ১২ ঘণ্টা পর দলটির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়। এখন তড়িঘড়ি করে তার শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা জানাতে আরও কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে দলটি। এমন আচরণ ভালোভাবে নেয়নি যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গী অন্য দলগুলো।

নিকট অতীতে বিএনপির ‘পরম বন্ধু’ হিসেবে পরিচয় পাওয়া ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানাতে বেশ গড়িমসি করেছে দলটি। রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা ও কানাঘুষা শুরু হওয়ার পর অনেক দেরিতে (প্রায় ১২ ঘণ্টার পর) তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক জানানো হয়।

বিএনপি নেতারা বলছেন, ২০১৮ সালে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর একক প্রচেষ্টায় বিএনপির সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। তার প্রচেষ্টায় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপেও অংশ নেয়। কিন্তু ২০২২ সালে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন তিনি। যা বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব ভালোভাবে নেয়নি। এ কারণে গত কয়েক মাস ধরে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। তাই ‘লন্ডন থেকে অনুমতি’ পাওয়া পর্যন্ত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে শোক জানাতে সময় লেগেছে দলটির!

বিএনপির একটি সূত্রে জানা গেছে, শোক জানাতে দেরি করলেও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শেষ বিদায়ে শ্রদ্ধা জানানোর অংশ হিসেবে তড়িৎ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তারা। এর মধ্যে একটি হলো, আজ রাতে (সাড়ে ৯টার দিকে) ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে তার বাসায় যাবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আর কাল শহীদ মিনারে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি প্রতিনিধি দল যাবেন। এরপর মির্জা ফখরুল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জানাজায় অংশ নেবেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাসায় যাবেন। আর কাল মহাসচিবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল শহীদ মিনারে তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে বিএনপির শোক জানাতে সময় নেওয়ার বিষয়টিকে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীদের অনেকে ভালোভাবে নেননি। কারণ, সবশেষ ৬-৭ মাস ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ভালো না থাকলেও তিনি সবসময়  খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। তার মতো একজন দেশপ্রেমিক ও বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষীর মৃত্যুতে শোক জানাতে এত কার্পণ্য দেখাতে হবে কেন?

এএইচআর/এসকেডি