ওলামা লীগকে স্বীকৃতি দিলেও অপেক্ষায় রাখল আওয়ামী লীগ
# ২৯ বছর পর সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিল আওয়ামী লীগ
# পহেলা বৈশাখ অনৈসলামিক ঘোষণা দিয়েছিল ওলামা লীগ
# ২০১৯ সালে বিপিএল নিষিদ্ধ চেয়েছিল সংগঠনটি
# বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন বাতিলের দাবি তুলেছিল ওলামা লীগ
# প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সম্মেলন
প্রতিষ্ঠার ২৯ বছর পর সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের স্বীকৃতি পেল ওলামা লীগ। তবে দলের সহযোগী না সমমনা সংগঠন হবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী জাতীয় কাউন্সিল পর্যন্ত। সেখানে তাদের স্বীকৃতি দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শনিবার (২০ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ওলামা লীগের প্রথম সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
যদিও দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ রয়েছে ওলামা লীগের বিরুদ্ধে। সংগঠনটি পহেলা বৈশাখকে ইসলাম বিরোধী ও অনৈসলামিক আখ্যায়িত করে বিবৃতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালে বিপিএল নিষিদ্ধ এবং বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন বাতিলের দাবিও করেছিল সংগঠনটি। এসব ঘটনার জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় ক্ষমতাসীনদের। তখন থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিল আওয়ামী লীগ।
নব্বইয়ের দশকে ওলামা লীগের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালের পর থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সক্রিয় হতে দেখা যায়। এরমধ্যেই বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে এ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ওলামা লীগ নামে কোনো সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।
বিজ্ঞাপন
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওলামা লীগের একটি ইচ্ছা ছিল যে তারা সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তা সম্ভব হয়েছে। আমি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি যেখানে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা স্থান পাবেন। কমিটিতে যেন বাস্তবতা ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকে। নেতাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলায় আসতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথে ওলামা লীগের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঝে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতা দেখা গিয়েছিল। তবে সেসব কাটিয়ে উঠে যেন একটি যোগ্য কমিটি তৈরি হয়।’
ওলামা লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান।
নব্বইয়ের দশকে ওলামা লীগের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালের পর থেকে সংগঠনের নেতাকর্মীদের সক্রিয় হতে দেখা যায়। এরমধ্যেই বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে নানান বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে এ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে ওলামা লীগ নামে কোনো সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি
দুই নেতা তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওলামা লীগ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নাম লিখিয়েছে। কিন্তু এখন থেকে একে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
ওলামা লীগ দীর্ঘদিন রাজপথের আন্দোলনে ছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পুলিশের আক্রমণের মুখেও রাজপথ ছাড়েনি। নেত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশ তারা অমান্য করেনি। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল, তারা সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। সময় লেগেছে, তবে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সম্মেলন হচ্ছে।’
>> উঠানেই ‘দুই হাত’ তুলে ভোট চাইবে আওয়ামী লীগ
ওলামা লীগের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের আদর্শিক রাজনীতি প্রতিফলিত হবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকা মহানগরে দুটিসহ সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠনের কমিটি গঠনের কথা বলেন কাদের।
ওলামা লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘দলাদলি করবেন না। বদনাম কামাবেন না। ওলামা লীগের নামে চাঁদাবাজি করবেন না। বদনাম যেন না হয়। প্রোগ্রাম করবেন, পয়সা না থাকলে আমাকে বলবেন। নেত্রীকে আমি বলব। আপনাদের খরচ যেটা প্রয়োজনীয় সেটা নেত্রীই বহন করবেন। কিন্তু আপনারা চাঁদাবাজি করে দুর্নাম কামাবেন না। এটা অতীতের অনেকেই করেছে। আপনার খুব ভালো করেই জানেন।’
>> দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : দলীয় কৌশলে ‘কূটকচাল’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা ওলামা লীগকে একটি সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত নীতি আদর্শের প্রতি অনুগত বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের সৈনিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শেখ হাসিনার পরীক্ষিত সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিয়ে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। আপনারা লাকি। এতদিন ওলামা লীগ বিভিন্ন ধারায় চলেছে। বিতর্কিতভাবে চলেছে। আওয়ামী লীগ এক কথা বলেছে, পেছন থেকে আপনারা অন্য কথা বলেছেন। বিরোধী কথাবার্তা বলা যাবে না। শেখ হাসিনার সরকার যে কথা বলবে তার সঙ্গে মিলিয়ে আপনাদের কথা বলতে হবে। বিরোধ করা যাবে না।’
এমএসআই/ওএফ