দুটি প্রশ্নে সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলছেন, সরকার কীভাবে পদত্যাগ করবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কীভাবে গঠন করবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) মৎস্য ভবনের সামনে সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংস্কার করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতারা।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সমাবেশে অংশ নেওয়া তো অপরাধ নয়। কিন্তু পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে এই সরকার রাজপথ রক্তাক্ত করতে চায়। গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিতে হলে রক্ত দেব। শান্তি সমাবেশ করবেন ভালো কথা। শান্তি সমাবেশ অন্যদিন করেন না কেন? আমরা যেদিন কর্মসূচি করি সেদিনই কেন করেন? গন্ডগোল করার জন্য? সাবধান। সন্ত্রাস করতে এলে জনগণ ছাড় দেবে না। সরকার চরম সংঘর্ষের দিকে সবাইকে ঠেলে দিতে চাইছে।

মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, শেখ হাসিনা কি আইয়ুব খান বা এরশাদের মতো বিদায় নিতে চান? এই সিদ্ধান্ত সরকারি দলকে নিতে হবে। এখনো রাস্তা খোলা আছে। কীভাবে পদত্যাগ করবেন এবং কীভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন– এই দুই প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেন। তাহলে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা রাস্তা খোলা থাকবে। যদি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারেন তবে তাদের বিদায় দেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দিন পালটে গেছে। আগে বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ করে দিত। এবার একটা ঘোড়াও বন্ধ করতে পারেনি। সময় সব সময় একরকম থাকে না। আগে মানুষ দেখা হলে জিজ্ঞেস করত, শেখ হাসিনা কবে যাবে? এখন জিজ্ঞেস করে, কতদূর? আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশে টেনে টুনে ৫০ হাজার মানুষ নেই। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে কিন্তু এই সত্য প্রধানমন্ত্রী মেনে নেবেন না।

সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, এক দফা বাস্তবায়ন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে এক দফা বাস্তবায়িত হলেই আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গড়তে পারব।

তিনি বলেন, মানুষ আগামীকাল থেকে প্রতিরোধ করা শুরু করবে। আগামীকাল বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকা শহরের সব প্রবেশ মুখে অবস্থান কর্মসূচি করবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দল। শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে গুন্ডা-পুলিশ দিয়ে বাধা দেওয়ার, হামলা করার চেষ্টা করবেন না। এরকম কিছু করলে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠবে।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সরকার নাকি বিএনপির প্রেমে পড়ে গেছে। বিএনপি যে দিন সমাবেশ করে তারাও সে দিন সমাবেশ দেয়। এটার মানে হচ্ছে পায়ে পাড়া দিয়ে আপনারা চলছেন। গুন্ডা বাহিনী দিয়ে তারা শান্তি সমাবেশ করছে।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলদের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন আহমেদ স্বপন প্রমুখ।

এএইচআর/এসএসএইচ/